নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগামী ৩০ জুন আইএফএ সচিব পদে উৎপল গাঙ্গুলির তৃতীয় টার্ম শেষ হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে আইএফএ’তে সচিব পদে কোনও নির্বাচন হয়নি। ২৪ বছর পর আইএফএ’তে নির্বাচনের হাওয়া। এমনিতে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কুরেশি- গাঙ্গুলি কমিটির রিপোর্ট এখনও পেশ না হাওয়ায় উৎপল গাঙ্গুলির টানা চারটি টার্মে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু ঘটনা হল, গত পাঁচ- ছয় বছর আইএফএ প্রত্যাশিতভাবে চলছে না। ২০১২-১৩ সাল থেকে ক্লাবগুলি টিফিন খরচ বাবদ অনুদান পেয়েছে মাত্র একবার। ইলিয়ট শিল্ড- বঙ্কিম কাপ দীর্ঘদিন বন্ধ। নার্সারি লিগও নিয়মিত হয় না। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনেক দিন উঠে গিয়েছে। তিন প্রধানসহ বিভিন্ন ডিভিসনের চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স দল পুরস্কার পায় না। মোটা অর্থ পাওনা রেফারিদের। তাঁদের বকেয়া প্রতিটি মরশুমে বাড়ছে। দুই- তিনটি বেসরকারি সংস্থা পাশে না থাকলে রেফারিরা ধর্মঘটে বসতেন। ক্যান্টিন ভাড়ায় ইলেকট্রিক বিল ও কর্মীদের মাইনে হচ্ছে সিআরএ’তে। আইএফএ মেডিক্যাল ইউনিটে হল্যান্ড থেকে আনা দুটি আধুনিক স্ট্রেচারের খোঁজ নেই। কলকাতা লিগের ডার্বি ম্যাচ হলে দুই- তিনটি টিকিটের বই (প্রতি বইয়ে ১০০ টিকিট থাকে) হারিয়ে যাওয়াটা আইএফএ প্রশাসনের ‘অভ্যাসে’ পরিণত হয়েছে। এককথায় বঙ্গীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থায় চলছে নৈরাজ্য। সচিব অনেক চেষ্টা করেও কলকাতা লিগের প্রিন্সিপাল স্পনসর আনতে পারেননি। কো-স্পনসর হিসাবে এবিডি সংস্থার ৭৫ লাখই ভরসা। ইদানীং চ্যানেল পার্টনারের কাছ থেকে চুক্তির পুরো অর্থ আদায় করতে পারে না আইএফএ। এবারও পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় ডিভিশনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ফুটবলার সই করেছে। বাংলার গ্রাম-গঞ্জে ফুটবল খেলার প্রবণতা এখনও আছে। রাজ্যের ফুটবলকে বাঁচাতে সচিব নির্বাচনের আগে বেশ কিছু ছোট ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় আইএফএ’তে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন। গত দুই মাসে তিন-চারবার নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছেন তাঁরা। ময়দানের ফুটবল ক্লাবগুলিকে জোটবদ্ধ করতে কলকাতা ও হাওড়া দুই কর্তা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁরা দুই জনেই আইএফএ’র প্রাক্তন সহ সচিব বেশ সক্রিয় ছিলেন। অন্যদিকে, ময়দানের প্রভাবশালী এক ক্রিকেটকর্তাও আইএফএ’র নিস্ক্রিয়তা নিয়ে সরব। তিনি গত দুই বছর আইএফএ’র সঙ্গে জড়িত। ২০১৭-১৮ মরশুমে লিগ সাব কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে ছিলেন সক্রিয়।
অন্যদিকে উৎপল গাঙ্গুলিও বসে নেই। নির্বাচনের আগে জি- অনূর্ধ্ব- ১৯ ফুটবল প্রতিযোগিতা সংগঠন করছেন কলকাতায়। শনিবার তিনি ঘোষণা করেদিলেন ১৪ জুলাই থেকে শুরু হবে প্রিমিয়ার লিগ। ডুরান্ডের জন্য লিগ দ্রুত করতে চাইছেন তিনি। জেলার ১৬টি দল খেলছে। উল্লেখ্য, গভর্নিং বডির ৫৪ জন সদস্যর মধ্যে নয়জন জেলার প্রতিনিধি। ট্রেডস কাপও করছেন সচিব। এই প্রেক্ষিতে সোমবার নির্বাচন শেষ হতেই আইএফএ সচিবের হঠাৎ ডাকা প্রেস কনফারেন্স অন্যমাত্রা পেয়েছে। ২৩ মে নির্বাচন মেটার পর রাজ্যের কোনও ‘বিশেষ প্রভাবশালী মহল’ সিএবি ও মোহন বাগান নির্বাচনের মতো আইএফএ’র আসন্ন সচিব নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে কিনা তা নিয়ে কৌতুহল। উল্লেখ্য, আইএফএ সভাপতি অজিত ব্যানার্জি জানিয়েছেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলেও কোনও পক্ষে নেই। স্রেফ ফুটবলের পক্ষে আমি।’