কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শরীরকে বিশ্রাম দিতে জিম এড়াচ্ছেন তিনি। তুলনামূলকভাবে বেশি সময় ব্যয় করছেন যোগাসনে। একটানা ফিল্ডিং ও অনুশীলনের পর যে ক্লান্তি থাবা বসাচ্ছে শরীরে, তা কাটিয়ে উঠতে নিয়মিত ম্যাসাজ নিচ্ছেন জামাইকান তারকাটি।
দ্বাদশ আইপিএলে রানের খরা কাটিয়ে উঠতে সফল হয়েছিলেন গেইল। করেছেন ৪৯০ রান। তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ৪০.৮৩। গেইল বলেছেন, ‘এটা আমার পঞ্চম বিশ্বকাপ। অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। সারা বছর ধরে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলি। কিন্তু বিশ্বকাপের সময় এলে অন্যরকম শিহরণ তৈরি হয় মনের মধ্যে। যে ভাবে ব্যাট করছি, তাতে ভালো রান করার ব্যাপারে আমি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।’
ছক্কা হাঁকানোর ক্ষেত্রে ক্রিস গেইলের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চার ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে ৩৯টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। আইপিএলে গেইলের ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ৩৪টি ছক্কা। তবে চার বছর আগে তাঁকে যতটা ভয়ঙ্কর লাগত, এখন ততটা লাগে না। তার একটা কারণ অবশ্যই বয়স বৃদ্ধি। গেইল বলেছেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়সও বাড়বে। এটাই স্বাভাবিক। বয়স তো আর কমবে না? তবে বাইশ গজে সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। মনের জোরে অনেক কিছু করা যায়। সেই কারণে আমি ফুরফুরে মেজাজে থাকি। এই বয়সে শারীরিক সক্ষমতা কমবে। তবে মনের জোরটা একই রকম আছে। মন যেটা করতে চায়, শরীর সেটা অনেক সময় করতে সায় দেয় না। আমি মানসিক দৃঢ়তার সঙ্গে অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে এবারের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাফল্য এনে দিতে চাইছি। দলের অধিকাংশ ক্রিকেটারই জিমে বেশি করে সময় কাটায়। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উলটো। আমি যতটা সম্ভব বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করি। ম্যাসাজ নিচ্ছি, ফিজিক্যাল ফিটনেসের উপর জোর দিচ্ছি প্র্যাকটিসের সময়। তাতে অনেক বেশি প্রাণবন্ত থাকছি।’
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন ক্রিস গেইল। চারটি ইনিংসে তিনি ৪২৪ রান করেছিলেন। তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ১০৬। দু’টি শতরানও করেছিলেন তিনি। মূলত এই পারফরম্যান্স দেখেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের নির্বাচকরা গেইলকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আইপিএলে তাঁর দুরন্ত ব্যাটিং দেখার পর অনেকেই বলছেন, সিদ্ধান্তটা সঠিকই হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১০৩টি টেস্ট ও ২৮৯টি ওয়ান ডে খেলেছেন গেইল। গোটা বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন টি-২০ লিগেও তাঁকে খেলতে দেখা যায় সারা বছর ধরে। এই প্রসঙ্গে গেইল বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী, আমার একটা সময় মনে হয়েছিল ক্রিকেটকে বিদায় জানাব। কিন্তু ভক্তদের নিখাদ ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা সেটা করতে দেয়নি। ভক্তদের দাবি মেনেই আজও খেলে যাচ্ছি। আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করছি। কারও পক্ষে সারা জীবন খেলা সম্ভব নয়। একদিন তো অবসর নিতেই হবে। তবে বিদায় নেওয়ার আগে আরও কিছু ম্যাচে দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করব। বিশ্বকাপ জেতাই এখন আমার এক মাত্র লক্ষ্য।’
১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ক্রিস গেইলের। দু’দশক ধরে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। দেশকে বহু সাফল্য এনে দিয়েছেন। মুকুটে যোগ হয়েছে নানা সম্মান। তবে ক্রিস গেইলের ক্রিকেট জীবনের একটা অধ্যায় আজও ফাঁকা রয়েছে। এর আগে চারবার বিশ্বকাপ না জেতার আক্ষেপ আজও তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে। গেইল বলেছেন, ‘প্রথম যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছিলাম, তখন একবারও ভাবিনি এতগুলো বিশ্বকাপ খেলব। তবে ধারাবাহিক সাফল্য আমাকে কুড়ি বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। কঠিন পরিশ্রম কখনও বিফলে যায় না। সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ সব সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু কখনও হাল ছাড়িনি। বিগত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাপাক পরিবর্তন ঘটেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। তবে এখন আমাদের দল অনেক বেশি সংঘবদ্ধ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডেও পরিবর্তন এসেছে। ক্যারিবিয়ান জনগণের কাছে ক্রিকেট ধর্মের মতো। আমার বিশ্বাস গোটা দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিশ্বকাপ জেতার জন্য ঝাঁপাব।’