বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিশ্বকাপ নিয়ে কি বাড়তি চাপ অনুভব করছেন শিখর ধাওয়ান? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি সেই ধরনের লোক নই যে চাপ অনুভব করব। সমালোচকদের কাজ সমালোচনা করা। এগুলো নিয়ে আমি বেশি মাথাও ঘামাই না। আমি যদি ৫-১০টা ম্যাচ রান নাও করতে পারি, তাহলে এটা মনে করি না যে সব শেষ হয়ে গেল। আমি কী ধরনের ক্রিকেটার কিংবা কতটা যোগ্যতা রয়েছে আমার, সে ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। ’ উল্লেখ্য, শিখর ধাওয়ান ১২৮টি একদিনের ম্যাচে ৫৩৫৫ রান করেছেন। ১৬টি ওডিআই সেঞ্চুরিও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
অফ স্টাম্পের বাইরে তাঁর টেকনিকের দুর্বলতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। তবে ভারতীয় দলের ওপেনারটি তা নিয়ে মোটেও বিচলিত নন। শিখর বলেছেন, ‘কে কি লিখছে সেটা আমি বলতে পারব না। কারণ, খবরের কাগজে যা বেরোচ্ছে কিংবা টিভি’তে যেগুলো দেখানো হচ্ছে, তা আমি জানি না। কারণ, আমি কাগজ পড়ি না, টিভিও দেখি না। তাই যত কড়া সমালোচনা হোক, তা আমাকে দাগ কাটে না। আমার ফেসবুক ও টুইটার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেগুলিও আমি খুব কম ব্যবহার করি। আমি আসলে সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব বেশি সময় নষ্ট করতে চাই না। আমি মাঝে মধ্যে চোখ বুলিয়ে নিই। সত্যি বলতে কী, নেতিবাচক বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করার মতো সময় আমার জীবনে নেই। এই সব ব্যাপারে মাথা ঘামালে আমার ফোকাস নড়ে যাবে, মনোবল ভেঙে পড়বে। তাই এটা আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলার সুবাদে সৌরভ গাঙ্গুলি ও রিকি পন্টিংয়ের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়েছে শিখর ধাওয়ানের। এবারের আইপিএলের শুরুতে তিনি যখন রান পাচ্ছিলেন না, টেকনিকের যখন সমস্যা হচ্ছিল তখন দিল্লির পরামর্শদাতা সৌরভ ও কোচ পন্টিং হাতে ধরিয়ে ভুল শুধরে দিয়েছেন শিখরের। এই প্রসঙ্গে গব্বর জানিয়েছেন, ‘রিকি ও দাদা—দু’জনেই সফল অধিনায়ক ছিলেন। বহু খ্যাতি রয়েছে তাঁদের ঝুলিতে। স্বভাবতই ওঁদের অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে। ওঁরা স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, আমার টেকনিকে কোনও সমস্যা নেই। তবে যেখানে যেখানে খামতি ছিল, সেগুলি দ্রুত শুধরে নেওয়ার ক্ষেত্রে দু’জনের থেকে দারুণ সাহায্য পেয়েছি।’
১৫ বছর ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছেন শিখর ধাওয়ান। ২০০৪ সালে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল। স্মৃতির সরণি বেয়ে ধাওয়ান জানান, ‘আমি প্রথম যেদিন ফার্স্টক্লাস ম্যাচ খেলেছিলাম, সেদিন যেমন মনের জোর ছিল, আজও সেটা রয়েছে। আমি খুবই ভাগ্যবান ক্রিকেটার। তাই নেতিবাচক বিষয় নিয়ে কখনও ভাবি না। ন’বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার পর টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। তার মানে কি আমার মধ্যে দেশের জার্সি গায়ে খেলার ইচ্ছা আগে থেকে ছিল না? কিন্তু আমি ন’বছর ধরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। এখন ছ’বছর ধরে দেশের হয়ে খেলছি। এটা আমার কেরিয়ারের পক্ষে যথেষ্ট ইতিবাচক দিক।’
বাইশ গজের বাইরে আরও একটা পরিচিতি রয়েছে শিখর ধাওয়ানের। তিনি ধ্রুপদী সঙ্গীতের অনুরাগী। সেই সঙ্গে বাঁশি বাজানোও শিখছেন। এই প্রসঙ্গে ধাওয়ান বলেন, ‘সুফি সঙ্গীতের বড় ভক্ত আমি। ওয়াদালি ব্রাদার্স আমার ফেবারিট। আমি বাঁশি বাজানো শিখছি। উপভোগও করছি। আমার মনে হয়, যখন ম্যাচ থাকে না, প্র্যাকটিস থাকে না তখন যে সময়টা পাই, তখন এসব করি। ইউ টিউবে বাঁশি শোনার পর বাঁশি বাজানো শেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। এতে অনেকটাই চাপমুক্ত থাকা যায়। হোটেলের ঘরে বসে গল্প করার থেকে কিছু একটা শেখা ভালো বলে আমার মনে হয়েছে।’
দিল্লির ছেলে শিখর ধাওয়ানকে মাঝে মধ্যেই উড়ে যেতে হয় মেলবোর্নে। কারণ, তাঁর স্ত্রী আয়েশা ও সন্তানরা অস্ট্রেলিয়ার ওই শহরে থাকে। এই প্রসঙ্গে ধাওয়ান বলেন, ‘ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া থাকে। তাই ওদের সময় সময় পাশে পাই না। তবে দিন পনোরোর ছুটি পেলেই আমি মেলবোর্ন চলে যাই ওদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য।’