পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
তবে মেলবোর্ন পার্কে দিনের বাকি সব ম্যাচই ঢাকা পড়ে গেল শেষবেলায় এক মহাতারকার পতন ঘটিয়ে নতুন নক্ষত্রের আবির্ভাবের ঝলকে। সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ডস্ল্যাম মুকুট জয়ের রেকর্ডে চোখ রেখে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে যাত্রা শুরু করেছিলেন রজার ফেডেরার। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সী ফেডেক্সের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল স্টেফানোস সিৎসিপাসের অবিশ্বাস্য লড়াইয়ে। প্রথম রাউন্ড থেকেই দারুণ ছন্দে থাকা সিৎসিপাসকে নিয়ে অনেকেই বাজি ধরেছিলেন। তাঁকে ভবিষ্যতের ‘নম্বর ওয়ান’ বলতেও শোনা গিয়েছে অনেককে। চতুর্থ রাউন্ডে টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি ফেডেরারকে হারিয়ে সেই ধারণাকেই আরও সুদৃঢ় করলেন গ্রিক তরুণটি।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম তিনটি রাউন্ড বেশ দাপটের সঙ্গেই উতরে এসেছিলেন ফেডেরার। কিন্তু চতুর্থ রাউন্ডে সিৎসিপাসের আক্রমণাত্মক টেনিসের দাপটে শুরু থেকেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন তিনি। তবে প্রথম সেট টাইব্রেকারে জিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন ফেডেরার। কিন্তু এর পরেই ঘুরে যায় ম্যাচের চাকা। জমজমাট লড়াইয়ে পরের তিনটি সেটই তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন সিৎসিপাস। সময় যত গড়িয়েছে ততই ক্ষিপ্রতা বেড়েছে গ্রিক তরুণের। ম্যাচের চার সেটের তিনটিই গড়িয়েছে টাই ব্রেকারে। অন্য সেটটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দীর্ঘ হয়েছে। ফেডেরার বধে সার্ভিসই ছিল তাঁর মূল অস্ত্র। সিৎসিপাসের ২০টি এস সার্ভিসের বিপরীতে ফেডেরার মেরেছেন ১২টি। মূলত এখানেই হয়ে যায় ম্যাচের আসল ফারাকটা। তিন ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জিতে প্রথম বারের মতো অস্ট্রেলিয়া ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেন সিৎসিপাস। শেষ আটে তিনি মুখোমুখি হবেন স্পেনের রবার্তো বাতিস্তার। অপর ম্যাচে বাতিস্তাও অঘটন ঘটিয়েছেন ষষ্ঠ বাছাই মারিন সিলিচকে ৬-৭ (৬-৮), ৬-৩, ৬-২, ৪-৬, ৬-৪ সেটে হারিয়ে।
গতবারের চ্যাম্পিয়ন তথা সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতে দারুণ রোমাঞ্চিত সিৎসিপাস। তাঁর কথায়, ‘রজার এই খেলার একজন কিংবদন্তি। তাঁকে আমি অগাধ শ্রদ্ধা করি। ছয় বছর বয়স থেকেই আমি তাঁর পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে আসছি। তাঁর মুখোমুখি হওয়াটাও স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ছিল।’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনও শব্দ দিয়েই এই জয়কে আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না। এই মহুর্তে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। শুরু থেকেই আমার নিজের প্রতি বিশ্বাস ছিল। সেই মতো দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে গিয়েছি।’ ব্যক্তিগত হতাশা চেপে ফেডেরারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন গ্রিক তরুণের।
দিনের অপর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিধ্বংসী রাফায়েল নাদালের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি টমাস বার্ডিচ। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে চেক প্রতিদ্বন্দ্বীকে ‘রাফা’ ধরাশায়ী করলেন স্ট্রেট সেটেই। চোট সারিয়ে নতুন বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে নেমে প্রথম তিন ম্যাচে একটিও সেট খোয়াননি নাদাল। চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচেও তার অন্যথা হল না। বার্ডিচের বিরুদ্ধে এদিন ম্যাচের প্রথম নয়টি গেম টানা জিতে নেন তিনি। বিপক্ষকে কোনও গেম না দিয়েই প্রথম সেট জিতে নেন ১৭টি গ্র্যান্ডস্লামের মালিক। দ্বিতীয় সেটেও বার্ডিচকে সেভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সুযোগ দেননি রাফা। তবে তৃতীয় সেটে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে টাইব্রেকার পর্যন্ত লড়াই টেনে নিয়ে যান বার্ডিচ। কিন্তু তাতেও তিনি নাদালের স্ট্রেট সেটের জয় আটকাতে পারেননি। শেষ আটে নাদাল মুখোমুখি হবেন আমেরিকার ফ্রান্সেস টিয়াফোর।