বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সুকান্ত বেরা : শেষ ম্যাচে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে হার এড়াতে পারলেও, রনজি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ বাংলা।
চতুর্থ দিনের অন্তিম লগ্নে লড়াই দারুণ জমে উঠেছিল। অভিমন্যু ঈশ্বরণের অপরাজিত ২০১ ও মনোজ তিওয়ারির ১০৫ রানের উপর ভর করে ৬ উইকেটে ৪৩২ রান তুলে আচমকাই দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয় বঙ্গব্রিগেড। ১৬ ওভারে পাঞ্জাবকে করতে হত ১৭৩ রান। শুরুতে পর পর দু’টি উইকেট পড়ে গেলেও মনপ্রীত গনি ও যুবরাজ সিং দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন। কিন্তু গনির ভুলে যুবরাজ (১২) রান আউট হয়ে যান। তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও পাঞ্জাব কিন্তু জয়ের আশা ছাড়েনি। টি-২০ স্টাইলে ব্যাটিং করেন গনি। তাঁর ব্যাটে চার-ছক্কার বন্যায় ভেসে যাচ্ছিল বাংলার বোলারদের যাবতীয় প্রতিরোধ। চতুর্থ উইকেটে ক্যাপ্টেন মনদীপ সিংয়ের সঙ্গে ৪৬ বলে ৮৪ রান তোলেন তিনি। গনি যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, পাঞ্জাবের আশা জিইয়ে ছিল। গনি ২৮ বলে ছ’টি ছক্কা ও দু’টি চারের সাহায্যে ৫৪ রানে প্রদীপ্ত প্রামাণিকের বলে বোল্ড হতেই ব্যাকফুটে চলে যায় পাঞ্জাব। দুই দলের সম্মতিতে ম্যাচে যবনিকা পড়ে। ড্র হওয়ায় পাঞ্জাবকে তিন ও বাংলাকে এক পয়েন্টেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
রনজি ট্রফিতে ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে নিলেও বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি কিন্তু অন্তর্ঘাত তত্ত্ব খাড়া করেছেন। পাশাপাশি তিনি একাধিক বিষয়ের দিকে আঙুল তুলেছেন। মনোজ বলেন—
অন্তর্ঘাত তত্ত্ব: রনজি ট্রফি আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। কিন্তু টুর্নামেন্টে খেলতে নামার আগেই নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যে এটা ঘটিয়েছে, তাকে ধরার পাশাপাশি শাস্তি দেওয়া উচিত। এই ঘটনা দলের উপর খারাপ প্রভাব ফেলেছিল। দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি। ক্যাপ্টেন হিসাবে আমি দায়িত্ব নিচ্ছি। জানি না পরের টুর্নামেন্টে ক্যাপ্টেন থাকব কিনা। তবে আমাকে যেভাবে অপমাণিত হতে হয়েছে, তা প্রাপ্য ছিল না।
পছন্দের পিচ না পাওয়া: পছন্দের পিচ পাইনি। এই ম্যাচেও স্পিনিং ট্র্যাক হবে মনে হয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি । বাকি দলগুলি কিন্তু হোম ম্যাচ খেলার সুবিধা পেয়েছে।
বিশ্রী ফিল্ডিং: ফিল্ডিংয়ের দিকে আমাদের আরও নজর দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে স্পেশালিস্ট ফিল্ডিং কোচ রাখতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ফেলার খেসারত দিতে হয়েছে আমাদের।
ব্যাটিং ভরাডুবি: ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্যই আমরা ডুবলাম। অভিমন্যু ঈশ্বরণ দারুণ উন্নতি করেছে। বাকিদেরও ভালো করতে হবে। সুদীপ চ্যাটার্জি বড় ব্যাটসম্যান। কিন্তু গোটা মরশুমে ও প্রত্যাশা মতো খেলতে পারল না। অশোক দিন্দা প্রত্যেক ম্যাচ জেতাতে পারবে না। অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
প্রশাসনিক ব্যর্থতা: সরাসরি কারও নাম না করলেও সিএবি’র শীর্ষ কর্তাদের বাংলা দল নিয়ে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত মনোজের। তিনি বলেন, ভিশন টোয়েন্টি-২০ প্রোগ্রাম ভালো। কিন্তু তার থেকে কোনও লাভ আমরা পাচ্ছি না কেন সেটা দেখতে হবে। রনজি ট্রফির আগে মনোবিদ আনা হয়েছিল। সেটা একটা ম্যাচের জন্য। বাকি ম্যাচগুলিতে মনোবিদ রাখলে সুফল পেতাম।
আগামী মরশুমে বাংলার কোচ হিসাবে হয়তো দেখা যাবে না সাইরাজ বাহুতুলেক। এবছরেই তাঁর সঙ্গে সিএবি’র চুক্তি শেষ হচ্ছে। সিএবি কর্তারাও নতুন কোচের সন্ধান চালাচ্ছেন। মুস্তাক আলি টি-২০ টুর্নামেন্টের পরেই হয়তো পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে সাইরাজকে বিদায় জানাবে সিএবি। সেটা বুঝে গিয়েছেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন স্পিনারটি। তাই তিনি বললেন, ‘বেশ কয়েক বছর বাংলায় কাটালাম। জানি না কোচ থাকব কিনা। পরিবারকেও তো একটু সময় দিতে হবে।’