পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
প্রথমদিকে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চললেও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত এখন চরমে গিয়ে পৌঁছেছে। গত শুক্রবার ফরাক্কায় যাওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে হেলিকপ্টার চেয়ে পাননি রাজ্যপাল। কিন্তু, সফর বাতিল না করে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার সড়কপথে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। বর্ধমানের সার্কিট হাউসে তা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে কার অধিকার বেশি তা নিয়েও সওয়াল করেছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর যা অধিকার, রাজ্যের অধিকার তার চেয়েও কম বলে মন্তব্য করেছিলেন। রাজ্য বনাম রাজ্যপালের এই সংঘাত এখন দিল্লির সংসদের অন্দরেও পৌঁছে গিয়েছে। তৃণমূল সংসদ সদস্যরা রাজ্যপালের সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা নিয়ে অভিযোগও করেছেন। রাজ্যপালও তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। সোমবার শিলিগুড়িতেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, সংবিধান অনুসারে তিনি রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিং হওয়ার কথা ছিল। সেখানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের আসার কথা ছিল। রাজ্যপাল নিজের মুখে আসবেন বলেও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, আচমকা ১৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে ওই কোর্ট মিটিং স্থগিত করে দিয়েছে। ওই স্থগিত মিটিং কবে হবে, নতুন করে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। বিরোধীদের কটাক্ষ, রাজ্যপালকে আটকানোর জন্যই হয়ত ওই কোর্ট মিটিং বাতিল হয়েছে। ওই ঘটনার রেশ কাটার আগেই এই সায়েন্স কংগ্রেসে রাজ্যপালকে কার্যত ‘বাদ’ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে উদ্বোধন করানোর বিষয়টি নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ‘জল্পনা’ শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১২ ডিসেম্বর ও ১৩ ডিসেম্বর এই ‘চতুর্থ রিজিওনাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কংগ্রেস (ওয়েস্টার্ন রিজিয়ন)-২০১৯’ অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করার জন্য এবং তাঁর সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আগামী ৯ এবং ১০ ডিসেম্বর দু’দিন ধরে হবে। সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি দপ্তর এই অনুষ্ঠান করাচ্ছে। তাই আগামী ৯ তারিখের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী, পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্ত্রী ও বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ করা হয়েছে। কিন্তু, রাজ্যপালকে আদৌ আমন্ত্রণ করা হবে কিনা তা ‘খোলসা’ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনেকে বলছেন, সংঘাত যে জায়গায় পৌঁছেছে তাতে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপাল এক মঞ্চে থাকাটা কার্যত ‘অসম্ভব’। সেই কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হলেও এই অনুষ্ঠানে ‘ব্রাত্য’ থেকে যেতে পারেন রাজ্যপাল।
এ ব্যাপারে ‘চতুর্থ রিজিওনাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কংগ্রেস (ওয়েস্টার্ন রিজিয়ন)-২০১৯’ এর কার্যনির্বাহী কমিটির সম্পাদক তথা অঙ্কের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অরিজিৎ ঘোষাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। তিনি আসার ইচ্ছাপ্রকাশও করেছেন। তবে, অফিসিয়ালি চিঠি এখনও আমরা পাইনি। রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এই কমিটির চেয়ারম্যান তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যায়ের উপচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা বলেন, উদ্বোধক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা আগেই আমন্ত্রণ জানিয়েছি। রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ করেছেন? উত্তরে উপাচার্য বলেন, ‘আই হ্যাভ নো কমেন্ট’। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।