গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
প্রয়াত সাহিত্যিকের উত্তরাধিকারীরা জানান, সাহিত্যিক আব্দুস সাহেব ভারত ভাগের সময় বাংলাদেশে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ছিলেন ও বাংলাদেশ পুলিসের এসপি পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর লেখা কয়েকটি উপন্যাস ভারতেও পাওয়া যায়। ২০০১ সালের ৬ মে তিনি বাংলাদেশের খুলনা শহরে নিজের বাসভবনে প্রয়াত হন।
উত্তরাধিকারীরা আরও জানান, ভারত ভাগের পর প্রয়াত সাহিত্যিকের বিষয় সম্পত্তি ১৯৫৮ সালের ১২ জুলাই তাঁর তিন দাদা উম্মর আলি, একরামুল হক ও আব্দুল মজিদের নামে লিখে দিয়ে যান। ওই সম্পত্তির উত্তরাধিকার সূত্রে এখন ওই গ্রামের অনেকেই মালিক রয়েছেন।
কিন্তু এবছর ১৬ জানুয়ারি বহরমপুর থানার রাধারঘাট এলাকার এক ব্যক্তিকে প্রয়াত সাহিত্যিক বানিয়ে জাল দলিল তৈরি করে ওই সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ উঠেছে। বহরমপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ওই জাল দলিল তৈরি করা হয় বলে অভিযোগ। খড়গ্রাম বিএলএলআরও অফিসে সেই জমির রেকর্ড করা হয়। এরপর গত ২১ ফেব্রয়ারি ফের ওই জমিগুলি কান্দি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চারজনকে বিক্রি করা হয়।
গত কয়েকমাস ধরে প্রয়াত সাহিত্যিকের উত্তরাধিকারীরা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েছেন বলে দাবি। অভিযোগ জানানো হয়েছে কান্দি থানাতেও। কিন্তু কোথাও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। পাঁচটি দাগের মোট ১৭৫ ডেসিমেল জায়গার জাল দলিল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়াত সাহিত্যিকের উত্তরাধিকারী তথা ওই জমির অংশীদার রেফাইতুল্লা শেখ বলেন, এই এলাকার কয়েকজন দুষ্কৃতী ও জমি মাফিয়াদের একটি চক্র রয়েছে। যারা এই এলাকায় এই ধরনের কাজ করে চলেছে। আমরা পুলিসের কাছে এনিয়ে কয়েকবার অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না। উল্টে জমি মাফিয়াদের কাছ থেকে অনবরত হুমকি আসছে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য।
তিনি আরও বলেন, পুলিসের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে, প্রয়াত সাহিত্যিক ২০০১ সালে বাংলাদেশে মারা গিয়েছেন। তিনি কীভাবে জীবিত হয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেন? তাছাড়া জাল দলিলে প্রয়াত সাহিত্যিকের কোনও ছবি নেই। তাঁর টিপসই দেওয়া হয়েছে। একজন পুলিস আধিকারিক তথা প্রখ্যাত সাহিত্যিক কীভাবে টিপসই করতে পারেন, সেই প্রশ্ন আমরা পুলিসকে করেছি?
এ ব্যাপারে কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা কান্দি ব্লক তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, এই এলাকায় কিছু জমি মাফিয়া ওই ধরনের কাজ করে মানুষকে আতঙ্কিত করছে বলে অভিযোগ পাচ্ছি। তারা কারও ছত্রছায়ায় দিনদিন অতি সক্রিয় হয়ে উঠছে বলেও জানতে পেরেছি। আমরা পুলিসকে জানিয়েছি, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
কান্দি থানার পুলিস জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সই জাল করে দলিল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু যে জায়গায় জমিগুলি রয়েছে সেগুলি খড়গ্রাম থানা এলাকায়। তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগকারীদের খড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে খড়গ্রাম থানার পুলিস জানিয়েছে, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে। খড়গ্রাম ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ক্লিমেন্ট চিস্টপ ভুটিয়া বলেন, অভিযোগকারীরা যাবতীয় প্রমাণপত্র সহ দেখা করলে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।