গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
দলীয় সূত্রে খবর, বুধবার অনেক রাতে শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় রাস উৎসব পরিক্রমা করে বাড়ি ফেরেন। বিধায়ক শান্তিপুরের তিলিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন। অন্যদিকে, দীপঙ্করবাবুর বাড়ি শান্তিপুরের তোপখানা পাড়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার ভোরে হঠাৎই তৃণমূল নেতা পেশায় বাগআছড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের ঘুম ভেঙে যায় বোমার আওয়াজে। ঘুম থেকে উঠে তিনি বাইরে উঁকি দিয়ে দেখেন, তার বাড়ির সামনে কিছু দুষ্কৃতী বোমাবাজি করছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিসে খবর দেন। পুলিস আসার আগেই অবশ্য দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। পরে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখান থেকে একটি তাজা বোমা উদ্ধার করে। সেই বোমা পুলিস পরে নিষ্ক্রিয় করে।
এদিকে, দলের নেতার বাড়ির সামনে বোমাবাজির খবর পেয়ে বিধায়ক গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দেখতে পান তাঁর গাড়িতেও কেউ বা কারা ভাঙচুর চালিয়েছে। গাড়ির সামনের কাচ ভারী কিছু দিয়ে মেরে ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানেও পুলিস খবর পেয়ে পৌঁছে যায়। পরে শান্তিপুর থানার গাড়ি করে বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য দীপঙ্করবাবুর বাড়িতে যান। এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে শান্তিপুর থানার সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দু’টি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। যদিও এই ঘটনাগুলিতে পুলিস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তৃণমূল নেতা দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই কাজ কারা ঘটিয়েছে, সেটা বোঝা না গেলেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে সেটি বোঝা যাচ্ছে। এটাও বোঝা যাচ্ছে ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে এই কাজ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, এই ঘটনা কারা করল এবং কেন করল সেটা এখন খুঁজে বের করার বিষয়। বিষয়টি পুলিস আশা করি দেখবে। আমরাও আমাদের মতো বিষয়টি দেখছি। সিসিটিভি ফুটেজগুলি দেখা হচ্ছে। এর আগেও আমার সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বারংবার যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও সংশয় থাকছে না। যে বা যারা এভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন, তার যোগ্য জবাব শান্তিপুরের জনগণ আগেও দিয়েছেন আগামী দিনেও দেবেন। এমনিতেই যারা পিছিয়ে পড়া তাঁরা আরও বেশি পিছিয়ে পড়বেন। মানুষ দেখছেন, মানুষ বোঝেন, শান্তিপুরের মানুষ এইসব প্রশ্রয় দেয় না।
বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অনুমান দলের নিচু তলার কর্মীদের। প্রসঙ্গত, বিধায়কের শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য এবং পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। রাজ্য থেকে জেলা নেতৃত্বের আগে বহুবার চেষ্টা করেও তাঁদের সম্পর্কের জোড়া লাগাতে পারেনি। তৃণমূল সূত্রে খবর, শান্তিপুরে রাজ্যপালের অনুষ্ঠানে বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য একই মঞ্চে থেকে রাজ্যপালকে জড়িয়ে ধরে সৌজন্য বিনিময় বিষয়টিও জেলা নেতৃত্ব ভালোভাবে নেয়নি। তৃণমূলের অন্দরে এনিয়ে জল্পনা চলছে। শান্তিপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন সরকার বলেন, আমি বাইরে রয়েছি। ঘটনা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।