গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শুভেন্দুবাবু বলেন, এনআরসি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করব। এরাজ্যে এনআরসি হবে না। আপনাদেরকে কোনও কাগজ রাত জেগে সরকারি অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে না। আধার কার্ডের জন্যও পোস্ট অফিসের সামনে রাতে থাকার দরকার নেই। বাংলায় এনআরসি হবে না।
শুভেন্দুবাবু এদিন তাঁর বক্তব্যে জেলার বাসিন্দাদের আবেগ উস্কে দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে কাশ্মীরে কাজ করতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে এই জেলার পাঁচজন খুন হয়েছিলেন। জেলা থেকে যুবকরা কেন বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যাবেন তা নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করেন। শুভেন্দুবাবু বলেন, এই জেলার লোকেরা রত্ন। তাঁরা ছাড়া ভালো বিল্ডিং হতে পারে না। যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ কাজ তাঁদের বাদ দিয়ে হয় না। এই জেলার লোকেরা শুধু অভাবের তাড়ানায় বাইরে কাজ করতে যান এমনটা নয়। এই জেলার পাঁচজনকে জঙ্গিরা নৃশংসভাবে খুন করেছে। বিজেপি বলছে ওরা বাঙালি নয়। ওদের বাঙালি বলা যাবে না। খুনের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও বিবৃতি প্রকাশ করেনি। কোনও প্রতিবাদও তারা করেনি। আমাদের সরকার তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। ওদের পরিবারগুলি থেকে চাকরির জন্য ৬টি আবেদন জমা পড়েছিল। তাদের মধ্যে চারজনকে আমরা এমাসেই চাকরি দিয়ে দেব। এরাজ্যে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা। তাঁর কোনও বিকল্প নেই। তাই সাইনবোর্ড পার্টি কংগ্রেস আর উঠে যাওয়া সিপিএম থেকে দূরে থাকবেন।
এদিনের সভায় শুভেন্দুবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আবু তাহের, মোশারফ হোসেন মণ্ডল, সুব্রত সাহা প্রমুখ। এছাড়া জেলার অন্যান্য নেতারাও হাজির ছিলেন। তবে এদিনের সভায় বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়াম্যান নীলরতন আঢ্যকে দেখা না যাওয়ায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। বহরমপুরে এনআরসি বিরোধী সভায় দলের দুই নেতা ফিরহাদ হাকিম এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও আসার কথা ছিল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ফিরহাদ হাকিম জেলায় আসার জন্য ট্রেন ধরতে আসছিলেন। সেসময় হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থতা বোধ করায় ফিরে যান। পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অন্য কর্মসূচিতে রয়েছেন। সেকারণে তিনিও আসতে পারেননি।
এদিন শুভেন্দুবাবু নেতা এবং কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। এক হয়ে ভালোভাবে কাজ করবেন। দিদির উন্নয়নমূলক কাজ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন। কাজ পেতে মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়। মানুষের উপর খারাপ কিছু যেন না হয়। কোনও কিছু হলে দিদিকে জানাবেন। তিনি অতন্দ্র প্রহরী হয়ে আপনাদেরকে রক্ষা করবেন।
এদিন জেলার নেতারাও বক্তব্য দিতে গিয়ে কংগ্রেস এবং বিজেপিকে তোপ দাগেন। তবে দলের এই কর্মসূচির জন্য সাধারণ লোকজনদের নাকাল হতে হয়েছে। সকাল ১০টার পর অধিকাংশ রুটের বাস তুলে নেওয়া হয়। কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছিল। তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, সাধারণ মানুষের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। কিন্তু বৃহৎ স্বার্থে আমাদের এই কর্মসূচি নিতে হয়েছে।
সভা থেকে শুভেন্দুবাবু এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগার পাশাপাশি কংগ্রেসকেও তুলোধনা করেছেন। তিনি বলেন, একসময় এই জেলায় অনেকেই তৃণমূলকে তাচ্ছিল্য করত। তৃণমূল এখানে তৃতীয় দল ছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে আমরা দু’টি আসনে জয়ী হয়েছি। একটা সিট কোনওরকমে বিজেপি এবং সিপিএমের সাহায্য নিয়ে কংগ্রেস জিতেছে। শেষবারের মতো কংগ্রেসের একজন দিল্লি গিয়েছেন। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের পর এদিনই প্রথম বহরমপুরে শুভেন্দবাবু প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করলেন। এর আগে তিনি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সভা করেছেন।