বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভাগুলি থেকে নেতাদের পাঁচ হাজার লোক আনার টার্গেট দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র রানিনগর-২ ব্লক থেকে ৪২টি বাসে কর্মীরা আসবেন। অন্যান্য ব্লকগুলি থেকেও প্রায় সম সংখ্যক বাসে কর্মী এবং সমর্থকদের নিয়ে আসা হবে। জিয়াগঞ্জ, লালগোলা, ভগবানগোলা থেকে ট্রেনে কর্মীরা আসবেন। এদিন সকাল ১২টার পরেই শহর স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন। দুপুর দুটো থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। নেতৃত্বের দাবি, ওয়াইএমএ’র মাঠে প্রায় দু’লক্ষ লোকের সমাগম হবে। যদিও পুলিস রিপোর্ট অনুযায়ী, এক লক্ষ লোক হলেই মাঠ উপচে পড়বে। দু’লক্ষ লোক শহরে এলে বহু রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে সব লোক মাঠে ঢুকতে পারবেন না চিন্তা করেই তৃণমূল বিভিন্ন জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিনেরও বন্দোবস্ত করছে। দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের বলেন, আমাদের টার্গেট পূরণ হবেই। প্রতিটি ব্লকে গিয়ে আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। এনআরসি বিরোধী সভা নিয়ে জেলার বাসিন্দাদের উৎসাহ তুঙ্গে রয়েছে। সব ব্লকেই বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ট্রেনে চড়েও কর্মী-সমর্থকরা আসবেন।
দলের একাংশের মতে, এনআরসি ইস্যুকে সামনে রেখে তৃণমূল তাদের পায়ের তলার মাটি আরও মজবুত করতে চাইছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসও এই ইস্যুটিকে সামনে রেখে এগনোর চেষ্টা করছে। বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ে অধীর চৌধুরী পুজোর আগে সভা করেছেন। এছাড়া জলঙ্গি এবং ডোমকলেও তিনি এনআরসির বিরোধিতায় সভা করেছেন। কংগ্রেস যাতে এই ইস্যুটিকে হাইজ্যাক করতে না পারে সেকারণেই তৃণমূল বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। তারা এই সভা করেই থেমে থাকবে না। এই ইস্যুতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এনআরসি নিয়ে জেলায় আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। সমস্ত ব্লকের বাসিন্দারা নথি সংশোধনের জন্য ব্লক অফিসগুলিতে ভিড় করছেন। এমনকী বহরমপুর পোস্ট অফিসের সামনে রাত জেগেও জেলার বাসিন্দারা আধার কার্ডের জন্য লাইন দিচ্ছেন। তাই তৃণমূল এদিনের সভায় অনেক সাধারণ লোকেরও সমর্থন পাবে বলে অনেকেই মনে করছেন। ইতিমধ্যে এনআরসির বিরোধিতায় তারা ভরতপুরে সভা করেছে। ওই সভায় মূল বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তারপর যতগুলি সভা করছেন সব জায়গা থেকে এনআরসি ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন। প্রতিটি সভাতেই ভিড় উপচে পড়েছিল। তাই এদিনের সভায় টার্গেট পূরণ হবে বলে আশাবাদী জেলা নেতৃত্ব। সোমবার দলের জেলা সভাপতি সহ অন্যান্য নেতারাও মাঠ পরিদর্শন করে এসেছেন। তৃণমূলের দাবি, সকাল ১০টার পর থেকেই কর্মীরা সভায় আসতে শুরু করবেন। শহরের চার জায়গায় বাস বা ট্রেকারগুলি রাখা হবে। বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড, স্টেডিয়াম, উত্তরপাড়া মোড় এবং কুমার হস্টেল থেকে কর্মী-সমর্থকদের হেঁটে মাঠে যেতে হবে। মাঠে ঢুকতে না পারলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নেতাদের বক্তব্য শুনতে পাবেন। এছাড়া জায়ান্ট স্ক্রিনে সব কিছু দেখতেও পাবেন। দলের অনেকেই মনে করছেন, এদিনের সভা থেকে রাজ্য নেতৃত্ব পুরসভা ভোটের ঢাকও বাজিয়ে দেবেন। এই জেলায় সামনের বছর ছ’টি পুরসভার ভোট রয়েছে। সবগুলি নিজেদের দখলে রাখা শাসকদলের কাছে প্রেস্টিজ ইস্যু। সেকারণেই এনআরসি বিরোধী সভা থেকেই কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করে নেতৃত্ব ময়দানে নামাবে। লালবাগে বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দিতে এসে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক এই সভার ডাক দিয়েছিলেন। তারপর থেকে জেলার নেতারা ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েন।