বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, সুষ্ঠুভাবে সমাবর্তন সম্পন্ন হওয়ার কৃতিত্ব বিশ্বভারতী পরিবার, পুলিস, প্রশাসন সবার। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। জহর বেদিতে না বসা প্রসঙ্গে বলেন, রাষ্ট্রপতির অফিস থেকেই নির্দেশ এসেছে। সেখান থেকে যা বলা হয়েছে, তা মানা হয়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে এনে বহু বছর পর গতবার মেগা সমাবর্তন অনুষ্ঠান করে বিশ্বভারতী গৌরবকে ফুটিয়ে তুলেছিল। তেমনই অত্যধিক ভিড়ে পানীয় জলের পাউচের সঙ্কট এক বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রথম থেকেই বাড়তি নজর রেখে প্রধান অনুষ্ঠানকে নির্বিঘ্নে করতে সফল বিশ্বভারতী। এদিন পূর্ব নির্ধারিত কর্মূসচি মেনে উদয়ন গৃহে রবীন্দ্রনাথের চেয়ারে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে আম্রকুঞ্জে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আসেন রাষ্ট্রপতি। মঞ্চের প্রথমসারিতে থাকা তিন চেয়ারে বসেন উপাচার্য, রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল। আবেগঘন উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন উপাচার্য।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, যেখানে আধুনিক ভারতের দুই সর্বশ্রেষ্ঠ দূরদর্শী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও গান্ধীজি মিলিত হয়েছেন সেই জায়গাকে আমি তীর্থক্ষেত্র হিসেবেই মনে করি। এরপরে গান্ধীজির দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এখানে আসা, দু’জনেরই আশ্রম ভাবনা সবই উঠে আসে পরিদর্শকের কথায়। বাদ যায়নি কবিগুরুর গান্ধীজিকে মহাত্মা উপাধি দেওয়ার কথাও। ঠাকুর ও গান্ধীজির সম্পর্ক আধুনিক ভারতের এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। কবিগুরুর চিন্তাধারার প্রশংসা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে দিশা দেখিয়েছেন তিনি। পরে সপ্তপর্ণী তুলে দেওয়ার পর আশ্রম সঙ্গীত ও জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন উপাচার্য।
জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতি প্রাতঃভবন করেন শান্তিনিকেতন এলাকায়। তারপরে সকালে রাজ্যপাল জয়দীপ ধনকার একাই শান্তিনিকেতনের কাচ মন্দিরের সামনে হাজির হন। সেখানে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে ছবিও তোলেন। তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আই ফিল টপ অফ দ্য ওর্য়াল্ড’। পুরো ব্যবস্থাপনার তদারকি করতে সর্বক্ষণ উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা ও পুলিস সুপার শ্যাম সিং। সাধারণ মানুষকে কোনওরকম বড় সমস্যায় না ফেলে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করায় প্রশংসা কুড়িয়েছে বীরভূম পুলিসও।
এদিন অনুষ্ঠানের শেষে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে রাষ্ট্রপতি পাঠভবনে যান। সেখান থেকে রবীন্দ্র ভবন হয়ে পৌঁছন কলাভবনে। তিনি কলাভবনেরও রামকিঙ্কর বেইজের নির্মিত গান্ধী মূর্তি পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থাপত্যের স্টুডিও পরিদর্শন করেন বলে জানান কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয়কুমার মল্লিক। এরপর কুমিরডাঙার মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে অণ্ডাল বিমানবন্দরের উদ্দেশে পাড়ি দেন রাষ্ট্রপতি।