পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিতকুমার দেওয়ান বলেন, ভারী বৃষ্টি হলে খুব বেশি আতঙ্কের কিছু থাকত না। তবে অসময়ের এই বৃষ্টিটা আমাদের বেশ কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে। আশা করব, মানুষ সচেতন হয়েই স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশগুলি খেয়াল রাখবে। আমরাও ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এবছর নদীয়া জেলায় এখন অবধি ছ’হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বেশি সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। কালীপুজোর আগে থেকে অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হতে শুরু করে। কিন্তু নভেম্বর মাসের শুরুতে আচমকা বৃষ্টি হওয়ায় চিন্তায় ফেলেছে সকলকেই। যদিও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তার দাবি, শীত পড়লেই ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যায়, এই ধারণায় স্বাস্থ্য দপ্তর আর বিশ্বাসী নয়। গত কয়েক বছর ধরেই স্বাস্থ্য দপ্তর শীতের সময়ও ডেঙ্গু প্রভাব প্রতিরোধের জন্য সবরকমভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত বছরও নভেম্বরে শীতের মধ্যেও কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গু হয়েছিল। তাই এবার শীতেও ডেঙ্গু প্রতিরোধের কাজ চালানো হবে। তবে বৃষ্টিটা হওয়ায় বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।
পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে একটি বিশেষ প্রজাতির এডিস মশার সংখ্যা বৃদ্ধি হয়। সেই প্রজাতির নাম এডিস অ্যালবোপিটাস। এডিসেরই আর একটি প্রজাতি হল এডিস ইজিপ্টাই। দু’টি মশাই ডেঙ্গুর বাহক। শীত পড়লেই এডিস ইজিপ্টাই মশার সংখ্যা কমে আসে। কারণ, সেই সময় লার্ভাগুলি ফোটার মতো তাপমাত্রা পায় না। কিন্তু এডিস অ্যালবোপিটাস প্রজাতি মশার জীবনচক্র ঠান্ডার মধ্যেও সক্রিয় থাকে। সেই প্রজাতির সংখ্যা বর্তমানে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদের আশঙ্কা থাকছেই।
গত বছর যেখানে সব মিলিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১,১৫১ জন, সেখান এখনই এবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছ’হাজারের কাছাকাছি। জেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। পুজোর আগে দিন কয়েক বৃষ্টি হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা বলেন, তাতে মশার প্রকোপ বেড়েছে। ফলে সমস্যাও আরও কিছুটা বেড়েছে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় গত কয়েক মাসে জেলার সমস্ত প্রশাসনিক স্তরের কর্তারা মাঠে নেমেছিলেন। ব্লক পরিদর্শন, হাসপাতাল পরিদর্শন চালানো হয়েছে। জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রচারও চালানো হয়েছে। এত কিছুর পরও ডেঙ্গুর প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। প্রশাসনিক নির্দেশ, খাতায় কলমে কাজের সঙ্গে বাস্তবের বেশকিছু ফারাক থেকে যাচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এর আগেও রাজ্য থেকে একাধিক কর্তা নদীয়ার অবস্থা খতিয়ে দেখতে এসেছেন। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের দাবি, তাঁদের নির্দেশ মতো সব কাজই করা হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গুর আক্রান্তের সংখ্যা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। আপাতত, নতুন করে যাতে আর ডেঙ্গুর প্রকোপ না বাড়ে সে ব্যাপারে সতর্ক প্রশাসনও।