পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ফিরোজ স্থানীয় একটি ক্লাবের সম্পাদক ছিলেন। তার একমাসের একটি সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে, শাহজাহানের বিয়ের জন্য পাকা কথা চলছিল। এলাকার দু’টি তরতাজা প্রাণ এভাবে চলে যাওয়ায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই দুই যুবকের বন্ধু স্থানীয় সাবেন কারিকর বলেন, শাজাহানের বোনের শ্বশুরবাড়ির একটি পারিবারিক সমস্যা মেটাতে গিয়েছিলাম। শান্তিপুরের স্থানীয় ক্লাব থেকে আমরা ছ’টি মোটরবাইক নিয়ে ১২ জন কালনার উদ্দেশে বের হই। ওদের মোটরবাইক ফিরোজ চালাচ্ছিলেন। আর পিছনে বসেছিলেন শাজাহান। মোটরবাইকটি ফিরোজের নিজের ছিল। কালনার ওই এলাকায় পুলিস গাড়ি ও মোটর বাইক ধরছিল। তবে আমাদের দু’টি মোটরবাইক ধরেনি। আমরা বের হয়ে এগিয়ে চলে গিয়ে খানিকটা দূরে দাঁড়াই। পিছনে আমাদের আরও চারটি মোটরবাইক ছিল। ওরা আসছে না দেখে মোবাইলে ফোন করে শুনি ফিরোজ আর শাজাহান বাসের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন। আমরা যখন কালনা যাচ্ছিলাম তখন সকলের মাথায় হেলমেট ছিল। বাসটি চাপা পড়ে ওই দু’জন মারা গেল।
ফিরোজের পরিবারে স্ত্রী ও সন্তান ছাড়া বাবা মা ও এক ভাই রয়েছেন। ফিরোজের বাবা শওকত মল্লিক পেশায় তাঁত শ্রমিক। এমএ পাশ করার পর থেকেই ফিরোজ চাকরির চেষ্টা করার পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ফিরোজ বন্ধুর পরিবারের সমস্যা মেটাতে কালনায় যাচ্ছিলেন। অন্যদিকে, পেশায় রাজমিস্ত্রি শাহজাহান কারিকরের পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও পাঁচ বোন রয়েছে। সকল বোনকেই কষ্ট করে বিয়ে দিয়েছেন শাহজাহান। ঠিক করেছিলেন সবশেষে নিজে বিয়ে করবেন।
শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য ঘটনার খবর পাওয়ার পর কালনা হাসপাতালে যান। সেখান থেকে মৃত দুই ব্যক্তির দেহ ময়নাতদন্তের পর এদিন সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বিধায়ক বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ওই দুই পরিবারকে যাতে কোনওভাবে আর্থিক সাহায্য করা যায়, তা নিয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব। শাহজাহান শেখের বাবা আমিরুল শেখ বলেন, ছেলেরা বেরোনোর আগে আমি বলি একটা গাড়ি ভাড়া করে দিচ্ছি তাতে করে সবাই যা। সেটা না শুনে ওরা সবাই মোটরবাইকে গেল। এরপরই এই দুর্ঘটনার খবর। আমার একটাই ছেলে আমার কপালে এটা লেখা ছিল আমি বুঝতে পারিনি। ফিরোজের বাবা শওকত মল্লিক বলেন, আমি তখন হাটে ছিলাম। ছোট ছেলে ফোন করে আমাকে জানায় দাদা আর নেই। আমার ছেলে পাওয়ারলুম চালাত। পাশাপাশি সমাজসেবামূলক নানা ধরনের কাজ করত। সব শেষ হয়ে গেল। ফিরোজের স্ত্রী তাসু বিবি বলেন, আমার স্বামী বাস চাপা পড়ে মারা গেছে। আমার একমাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কীভাবে ওকে নিয়ে বাঁচব জানি না।