দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
দলমাদল সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার দশভুজার পরিবর্তে ২৮হাতের মা দুর্গা তৈরি করছে। শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে মায়ের ২৮হাতে অস্ত্রের পরিবর্তে পদ্ম তুলে দেওয়া হবে। মা দুর্গাকে মমতাময়ী রূপে দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরা হবে। কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নেপালের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। পুজো কমিটির সম্পাদক সুজিত কুমার সাঁতরা বলেন, ১৬তম বর্ষে পুজোর বাজেট তিন লক্ষ টাকা।
শালবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার গ্রাম বাংলার প্রাচীন পুজোর আদলে মণ্ডপ সাজাবে। হোগলা পাতা ও মাদুরকাঠি দিয়ে মূল মণ্ডপ তৈরি করা হবে। কমিটির সম্পাদক অরুণ সিনহা বলেন, এবার আমাদের পুজোর থিম ‘পুরানো সে দিনের কথা’। প্রাচীনকালে গ্রামবাংলায় যেভাবে পুজো হতো এবার আমাদের মণ্ডপে কাল্পনিক সেই ছবি তুলে ধরা হবে। এবার আমাদের পুজোয় পরিবেশ রক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। তার জন্য মণ্ডপে সম্পূর্ণ জৈব রং ব্যবহার করা হবে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারে বার্তা বাহক চিত্র তুলে ধরা হবে। মণ্ডপের দেওয়ালে আগেকার দিনের হারিয়ে যাওয়া কিতকিত, ডাং-গুলি, হাডুডু, কুমিরছানা, টায়ার প্রভৃতি খেলার চিত্র থাকবে। অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা হিসেবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কেমিক্যাল স্প্রে করা হবে। সাবেকি গড়নের প্রতিমায় মাটির সাজ থাকবে। প্রতিমার পিছনের চাল কুলোর আকৃতির হবে। এবার আমাদের পুজো ২২বছরে পড়ল। বাজেট ৫লক্ষ টাকা। এবারও মেলা বসবে।
শহরের তিলবাড়ি-লালবাঁধ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার তাদের পুজো মণ্ডপে মুখোশ শিল্পকে তুলে ধরবে। বিষ্ণুপুরের রাবণকাটা নাচের মুখোশ থেকে শুরু করে পুরুলিয়ার ছৌ। আদিবাসীদের মাটির ঘরের দেওয়ালে থাকা ত্রিকোণা কুলঙ্গি থেকে শুরু করে পল্লি সংস্কৃতির হারিয়ে যাওয়া দেওয়াল চিত্র পুজো মণ্ডপে তুলে ধরা হবে।
পুজো কমিটির সম্পাদক শঙ্খজিৎ রায় বলেন, বিষ্ণুপুরে মুখোশ পরে রাবণকাটা নাচ অথবা পুরুলিয়া ছৌ নৃত্য। গ্রাম বাংলার এই দুই প্রাচীন মুখোশ শিল্প এখন টিম টিম করছে। শিল্পীদের সম্মান জানাতে এবার আমাদের পুজো মণ্ডপে মূলত ওই দুই শিল্পকে তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে গ্রামের নানা দেওয়াল চিত্রও তুলে ধরা হবে।
রসিকগঞ্জ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার গাছ বাঁচানোর বার্তা হিসেবে অসুররূপী অরণ্য ছেদনকারীকে মা দুর্গার তির ধনুক বধের দৃশ্য পুজো মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলছে। পুজো কমিটির সম্পাদক সুমন্ত দাস বলেন, গোটা মণ্ডপটিকে অরণ্যের পরিমণ্ডলে গড়ে তোলা হবে। বাঘ, সিংহ সহ বন্য প্রাণীর মডেল থাকবে। নতুন প্রজন্মকে গাছ লাগানোয় উৎসাহিত করতে একটি গ্লোবের উপর শিশুকে গাছ লাগাতে দেখা যাবে। গাছের গুঁড়ির উপর অধিষ্ঠিত মা দুর্গার হাতে ত্রিশূলের পরিবর্তে তির ও ধনুক থাকবে। তিনি করাত হাতে গাছ কাটতে উদ্যত অসুররূপী দুই কাঠুরেকে বধ করবেন।
ময়রাপুকুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপে যানবাহনের ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। পুজো কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ সাহা বলেন, পরিবেশ দূষণের বিষয়টি বোঝাতে মণ্ডপের সামনে একটি জিপ রাখা হবে। তা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় বাড়ির আদলে তৈরি মণ্ডপের দেওয়াল কীভাবে কালো হয়ে যাচ্ছে। তা তুলে ধরা হবে। এছাড়াও মণ্ডপের ভিতরে বৃক্ষরোপণ ও জল সংরক্ষণের বার্তা দেওয়া হবে। প্রতিমা সাবেকি গড়নের হবে। মা দুর্গা গোরুর গাড়িতে করে প্রত্যন্ত জঙ্গল ঘেরা কুঁড়ে ঘরে আসছেন। সেই চিত্র থাকবে। আমাদের পুজো এবার ৩২তম বর্ষে পড়ল। বাজেট ৪লক্ষ টাকা।
বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি বিগ বাজেটের পুজোয় অন্যান্য বারের মতো এবারও পুজোর চারদিন ধরে মণ্ডপ সংলগ্ন মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।