কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জিআরপির আইসি গৌতম মুখোপাধ্যায় ও আরপিএফ ইন্সপেক্টর রাজীব নায়েক বলেন, জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠী রামপুরহাট স্টেশনে হামলা চালাতে পারে। রেলের পদস্থকর্তার কাছ থেকে এমনই সতর্কবার্তা এসেছে। তাই যে কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা বা হামলা রুখতে স্টেশনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যদিও তাঁদের দাবি, নিয়মিত তাঁরা নজরদারি ও তল্লাশি চালিয়ে আসছেন। তবে, সতর্কবার্তা আসার পর সেই নজরদারি কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলা হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলওয়ামায় ৪০জন সিআরপিএফ জওয়ানকে হত্যার দায় স্বীকার করে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠীর তরফে দিল্লি ডিভিশনের রেলের এক পদস্থ আধিকারিকের কাছে লিখিত হুমকি চিঠি দেওয়া হয়েছে। ১৪সেপ্টেম্বর ডাক মারফত আসা সেই হুমকির চিঠিতে বলা হয়েছে, জেহাদিদের হত্যা করার বদলা এবার তারা নেবেই। ৮অক্টোবর ভারতের বহু বড় বড় স্টেশন, রেল ভবন এবং মন্দিরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হবে। ভারতের মধ্যে কয়েকহাজার জেহাদি রয়েছে। নির্দেশ দেওয়া মাত্রই তারা সেই কাজ করতে প্রস্তুত।
এরপরই ঝুঁকি না নিয়ে রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রতিটি রেল ডিভিশনকে চূড়ান্ত সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি আগাম সতর্কতামূলক কী ব্যবস্থা নিতে হবে তারও নির্দেশিকা জারি করা হয়। বিভিন্ন স্টেশনের সঙ্গে সেই নির্দেশিকা রামপুরহাটেও এসে পৌঁছেছে।
সূত্রের খবর, ট্রেনে মালপত্র ওঠানো, নামানো ভেন্ডার কামরাগুলিতে নজরদারি বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে স্টেশনে অপেক্ষারত সন্দেহজনক যাত্রী ও ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় যাত্রীদের ব্যাগে তল্লাশি চালানোর জন্য বলা হয়েছে। যাত্রী সুরক্ষায় যাতে কোনওরকম ফাঁকফোকর না থাকে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। সবসময় আরপিএফ ও জিআরপিদের সজাগ থাকতে হবে।
সেই মতো এদিন সকাল থেকে রামপুরহাট স্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীদের পাশাপাশি স্টেশনের প্রবেশ ও বাহির পথে যাত্রীদের দাঁড় করিয়ে ব্যাগে তল্লাশি চালানো হয়। এছাড়া ট্রেন দাঁড়ালেই কামরায় উঠে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে যাত্রীদের ব্যাগে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ওয়েটিং রুমগুলিও বিশেষ নজরদারির মধ্যে আনা হয়েছে। এছাড়া স্টেশনে লাগানো সিসি ক্যামেরাতেও ২৪ঘণ্টা নজরদারি চালানো হচ্ছে।
রেল পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, বীরভূম জেলার মধ্যে ব্যস্ততম রামপুরহাট স্টেশন হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তারাপীঠ যাওয়া-আসা করেন। এছাড়া বিভিন্ন দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন ধরতে বহু যাত্রী এই স্টেশনে আসেন। তাই এখন থেকে ২৪ঘণ্টাই কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে রামপুরহাট স্টেশনকে।
রেলের আর এক নিরাপত্তা আধিকারিক বলেন, তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে স্নিফার ডগ থাকলে ভালো হতো। কিন্তু, কাছাকাছি স্টেশনের মধ্যে বর্ধমান ছাড়া স্নিফার ডগ নেই। তবে, অক্টোবরের প্রথম দিন থেকেই সেখান থেকে স্নিফার ডগ এনেও তল্লাশি চালানো হবে।
এদিকে ঢাল তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দার হয়েই দিন কাটাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ রামপুরহাট স্টেশনের জিআরপি ফাঁড়ি। যেখানে দরকার ৩০জন কন্সটেবল, সেখানে রয়েছে মাত্র সাতজন। কনস্টেবলের মতো ফাঁকা পড়ে রয়েছে বহু অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের পদও। জানা গিয়েছে, একজন এসআই ও তিনজন এএসআই রয়েছেন। এছাড়া কয়েকজন অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছে ঠিকই। কিন্তু তাঁরা প্রশিক্ষিত নন। তাঁদের হাতে বন্দুক থাকে না। ফলে, কোনও জঙ্গি হামলা ঘটলে তা রেলপুলিস কতটা মোকাবিলা করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।