সবুজ বিশ্বাস  জঙ্গিপুর, সংবাদদাতা: জঙ্গিপুরে এবার বিভিন্ন পুজো কমিটি দেবীর আরাধনায় নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। কোথাও উঠে এসেছে মহাভারতের দৃশ্যাবলী, তো কোথাও রাজস্থানের মন্দিরের আদলে প্যান্ডেল। আবার কোথাও বাহুবলী সিনেমার কাটাপ্পার দৃশ্য। সঙ্গে দর্শক টানতে আলোকসজ্জা তো থাকছেই। পাশাপাশি পরিবেশ সুস্থ রাখতে গাছ লাগানো, জল সংরক্ষণ, প্লাস্টিক বর্জন থেকে নারীদের সম্মন প্রদর্শনের আয়োজন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে জঙ্গিপুরে বিভিন্ন পুজো কমিটি রীতিমতো উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে নেমে পড়েছে দর্শকের মন জয়ের পাশাপাশি সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিতে।
জেলার সদর শহর থেকে অনেক দূরে এই মহকুমা শহর। সদর বহরমপুর শহরে বিপুল বাজেটের পুজোয় দর্শক টানতে রীতিমতো লড়াই চললেও পিছিয়ে নেই জঙ্গিপুরও। এখানকার পুজোগুলির বিপুল বাজেট না হলেও অল্প বাজেটকে পুঁজি করেই আন্তরিকতায় টেক্কা দিতে চায় একে অপরকে। আর সেই টানেই মহকুমা তো বটেই জেলার বিভিন্ন এলাকা এমনকী পাশের মালদহ থেকেও বহু দর্শক আসেন।
জঙ্গিপুর টাউন ক্লাব এবারে পঞ্চাশতম দুর্গোৎসব পালন করছে। দুর্গোৎসবের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মহাসমারোহে পুজোর আয়োজন করছে উদ্যোক্তারা। এবছর তারা তৈল চিত্রের মাধ্যমে মহাভারতের বিভিন্ন ঘটনাবলীকে ফুটিয়ে তুলছে। পুজোর বাজেট রাখা হয়েছে সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা। বাঁশ ও খড় দিয়ে সাজানো হচ্ছে প্যান্ডেল। ক্লাব মাঠে রাখা হচ্ছে বিশাল মহাদেবের মূর্তি। যদিও প্রতিবছরই টাউন ক্লাব সিনারির মাধ্যমে দেবী দুর্গার এক অপরূপ দৃশ্য উপহার দিয়ে থাকে। সঙ্গে গোটা ক্লাব হল জুড়ে নানান কারুকার্যের প্রদর্শনী। যা দেখতে বহু দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। পুজো কমিটির সম্পাদক সুনীপ প্রামাণিক বলেন, প্রতিবছরই আমরা নতুন কিছু করে থাকি। তবে, সিনারি আমাদের মূল আকর্ষণ। এবার মহাভারতের বিভিন্ন ঘটনা তৈলচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হবে। তাছাড়া, মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিতে আমরা প্রতীকী প্রদর্শনী রাখি। এবার গাছ বাঁচানো, জল সংরক্ষণের বিষয়ে বার্তা দেওয়া হবে।
রঘুনাথগঞ্জের চৈতক ক্লাব এবার বত্রিশতম বর্ষে রাজস্থানের জয়পুরের মন্দিরের আদলে বিশাল প্যান্ডেল ও দুর্গার মূর্তি গড়া হচ্ছে। দর্শকদের টানতে জয়পুরের মন্দিরে বিভিন্ন কারুকার্যও করা হচ্ছে। বাজেট রাখা হয়েছে দশ লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজস্থানের জয়পুরের মন্দিরকে এখানে তুলে ধরা হচ্ছে। সঙ্গে নারীর সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতিদিন ২০-২৫ জনের নারীদের দল আগত মহিলা দর্শনার্থীদের সাদরে আমন্ত্রণ জানাবেন। তাঁদের জন্য পানীয় জল, কফি সহযোগে তাঁদের সাহায্য করবেন। রঘুনাথগঞ্জ সর্ব্বজনীন পুজো কমিটির এবার ছিয়াশিতম বর্ষ দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছে। তাদের এবারের থিম বাহুবলীর কাটাপ্পার আদলে মূর্তি নির্মাণ। তারজন্য বাজেট সাত লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সম্পাদক বাপ্পা তেওয়ারি বলেন, বাহুবলী’খ্যাত কাটাপ্পাকে এবারে থিম করা হয়েছে। আশাকরি দর্শকদের মন জয় করবে। তাছাড়া, বস্ত্র বিতরণ ও নরনারায়ণ সেবারও আয়োজন থাকছে।