বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বছর দুয়েক আগেও আর পাঁচটা চালু কারখানার মতো রমরমিয়ে শিল্পের চাকা ঘুরত বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে। শ্রমিকদের কোলাহল আর ইঞ্জিনের গড়গড় শব্দকে সাক্ষী করেই শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মাও পূজিত হতেন ধুমধামে। শ্রমিকদের দাবি, কমপক্ষে কুড়ি জায়গায় পুজো হতো। ধুমধাম করে চলত প্রসাদ বিলি। কিন্তু এখন সবই অতীত। কারখানার গেটে তালা পড়ায় বন্ধ হয়েছে পুজোও। সব সংগঠন মিলিত মঞ্চ তৈরি করে বকেয়া দাবি নিয়ে কয়েক মাস ধরে স্থায়ী অবস্থান বিক্ষোভ করছে। সেখানেই পুজো করার ভাবনা নেওয়া হয়েছিল এবার। কিন্তু একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু সেই উদ্যোগে জল ঢেলেছে। শ্রমিকদের অভিমানের জেরে বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের হাতে ফল, ফুলও পেলেন না শিল্পের দেবতা। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল আর পাঁচটা দিনের মতোই ত্রিপলের নীচে অবস্থান মঞ্চে বসে রয়েছেন গুটি কয়েক শ্রমিক। পুজোতেও কোনও উদ্দীপনা নেই, রয়েছে কেবল নিরাশা। পুজো নিয়ে প্রশ্ন করায় কারখানার শ্রমিক পরমজিৎ সিং বলেন, কী হবে পুজো করে? একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে। মেয়েদের বিয়ে দিতে পারছি না। কেউ কেউ ছেলের লেখাপড়া করাতে পাচ্ছে না। আমাদের প্রাপ্ত টাকাটুকু পাচ্ছি না। কয়েকজন উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু আমাদের বেশিরভাগই এই অবস্থায় পুজো করা নিয়ে আপত্তি থাকায় পুজো হয়নি।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা এই কারখানা ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। কর্মহীন হন কারখানার ২২৬ জন শ্রমিক। কাজ গিয়ে তারা তো দিশেহারা ছিলেনই। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো তাদের পিএফের টাকাও আটকে গিয়েছে। এক বছর পার হয়ে গেলেও মেলেনি শ্রমিকদের এই শেষ সম্বলের টাকাটুকু। পিএফের টাকা না পাওয়া, কারখানা বন্ধের জেরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শ্রমিকরা সব সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে যৌথ মঞ্চ গঠন করে আন্দোলনে নামে। ২৯ জুলাই থেকে ধারাবাহিকভাবে কারখানার গেটের সামনে বসে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেছে। তবে এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পিএফ কমিশনের দড়িটানাটানি চলতে থাকে। শ্রমিকরা বেশ কয়েকবার এনিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে। এমনকী কমিশন ১৩ আগস্টের মধ্যে বকেয়া পিএফ মেটানোর নির্দেশও দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষকে।
কারখানার শ্রমিক নেতা দেবাশিস কর্মকার বলেন, আমরা ধারাবাহিক আন্দোলন করছি। এখনও কেউ টাকা পায়নি। শুক্রবার ফের আমাদের হেড অফিসে ডেকেছে। দেখি কী হয়।