কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
নাসরা কলোনি এলাকায় বহু বছরের পুরনো ঘুড়ির বাজার রয়েছে। হবিবপুর, বীরনগর, আড়ংঘাটা সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ঘুড়ি পাইকারি দরে নিয়ে যান। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিনও সেভাবে ঘুড়ির ব্যবসা চাঙ্গা না হওয়ায় চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের বলেন, যে সমস্ত বয়সের ছেলেরা আগে ঘুড়ি কিনতেন, তারাই এখন মোবাইলের দিকে ঝুঁকে গিয়েছেন। ফলে ঘুড়ির বাজার মন্দা। সারা বছরের তুলনায় বিশ্বকর্মা পুজোর সময় ঘুড়ির বেচাকেনা কিছুটা হলেও বাড়ে। বিশ্বকর্মা পুজোতে নানা রঙের ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। সাধারণ ঘুড়ির সঙ্গে মাছ ঘুড়ি, শীল ঘুড়ি, ডাক ঘুড়ির চাহিদা রয়েছে। এছাড়া, একতে, দেরতে, দোতে ঘুড়িগুলির বাজারে ভালো চলছে। একতে ঘুড়ির ওপর রংবেরঙের কলকা করা ঘুড়িগুলির মার্কেটে চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের কথা মাথায় রেখে এবছর প্লাস্টিকের তৈরি ঘুড়ি বানানো বন্ধ হয়েছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। সেই প্রচারে কান দিয়েই এখানকার ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের ঘুড়ি তৈরি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। আড়ংঘাটার যুবক শ্যামল মণ্ডল বলেন, আমাদের এলাকায় বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে আগে প্রতিবছর ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা করা হতো। এখন এসব অতীত। এখন খুব কম জায়গায় বাঙালির এই ঐতিহ্য দেখতে পাওয়া যায়।
বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে আগের দিন রাত জেগে এলাকার ছেলেরা অনেক জায়গায় সুতোয় মাঞ্জা দিত। সেখানে সাবু জাল দিয়ে তারমধ্যে কাচের গুঁড়ো মিশিয়ে মাঞ্জা দেওয়া হতো। সেই মাঞ্জার সুতোতে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটার পর সেই নাইলনের মাঞ্জা দেওয়া সুতো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। গাছের ডালে সেই সুতো জড়িয়েও বহু পাখির প্রাণহানি হয়েছে। এই কারণে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা অনেকটা কমে গিয়েছে।
নাসরা কলোনি এলাকায় বহু দশক ধরে ঘুড়ি বানিয়ে আসছেন ৭৫ বছর বয়সি ঘুড়ি শিল্পী নিত্যানন্দ দাস। তিনি বলেন, ১৫ বছর বয়স থাকাকালীন শরীর খারাপ থাকায় একদিন বিকেলে গ্রামের পুকুর পাড়ে বসেছিলেন। সেই সময় একটি ঘুড়ি কেটে গিয়ে তাঁর পায়ের সামনে এসে পড়ে। সেই ঘুড়ি দেখে তাঁর প্রথম ঘুড়ি তৈরি করার আগ্রহ জাগে। সেই থেকে টানা ৬০ বছর ধরে তিনি এই ব্যবসা করছেন। বৃদ্ধকে এই ঘুড়ি তৈরি করতে সাহায্য করেন তাঁর ছেলে জগন্নাথ দাস। এখন তাঁদের ঘুড়ি তৈরি করার আস্ত একটি কোম্পানি রয়েছে। সেখানে অর্ডার অনুযায়ী সারাবছরই ঘুড়ি তৈরি করা হয়। তবে এখন অর্ডারের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ঘুড়ি শিল্পী নিত্যানন্দ দাস বলেন, এলাকায় আমার ঘুড়ির সুনাম রয়েছে। এখনও স্থানীয় এলাকা সহ আশপাশের এলাকা থেকেও আমার দোকানের ঘুড়ি কিনতে আসেন অনেকে।