বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এদিন রামপুরহাট পুরসভার অনুষ্ঠান ভবনে লোকসভা ভোট পরবর্তী পর্যালোচনার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানে রামপুরহাট-১ ব্লকের সমস্ত জনপ্রতিনিধি, শহরের কাউন্সিলার ও নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যদিও বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি এদিন অনুপস্থিত ছিলেন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত শতাব্দীকে শুরুতেই শহর ও ব্লকের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক ও শাড়ি তুলে দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। লোকসভা ভোটের পর রামপুরহাটে প্রথম বৈঠকে শতাব্দী বলেন, নির্বাচনী পর্যালোচনা করা হলে কিছু অপ্রিয় কথা আমাকে বলতে হবে। যেটা আপনাদের খারাপ লাগবে। লোকসভা নির্বাচনের আগেই আপনাদের সঙ্গে মিটিংয়ে বলেছিলাম রামপুরহাটের ফলাফল ভালো হওয়ার কথা নয়, আপনারা দেখুন। কিন্তু আপনারা একশো ভাগ কাজ করেননি। ২০০৯সাল থেকে রামপুরহাটে রেলের ছ’ফুঁকো দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়। তাছাড়া টিআরডিএ’র মাধ্যমে এখানে অনেক বেশি উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। যেটা মুরারই, সাঁইথিয়া বা অন্য কোথাও সম্ভব হয়নি। এত কাজের পরও এই বিধানসভায় এই ফলাফল হলে তা লজ্জার নয়, দুঃখের। তিনি বলেন, লজ্জা নয় এই কারণে যে আমি সাংসদ হিসেবে কাজ করেছি। কাউন্সিলাররা ওয়ার্ডের জন্য যা চেয়েছেন, তাই দিয়েছি। তার মানে আমার কাজ ১০০শতাংশ করেছি। কিন্তু আপনারা একশো ভাগ কাজ করেননি। এই ফলাফল আমাদের প্রাপ্য ছিল না। আমি পুরসভা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেখানে যেখানে যেতে বলেছেন প্রচারে গিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।
এদিন দলীয় নেতা-কর্মীদের পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেন শতাব্দী। তিনি বলেন, অন্যান্য বিধানসভাগুলি লিড না দিলে আমার জেতা সম্ভব ছিল না। তাঁদের জন্য কৃতজ্ঞ। তবে লজ্জা ও দুঃখ করে তো রাজনীতি হবে না। সামনে পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচন। এবার জোর দিয়ে ভোট করবেন। না হলে আপনাদের নিজেদেরই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। দল থেকে যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ফাঁকি না দিয়ে সেগুলি অনুসরণ করুন। পাশাপাশি তিনি বলেন, আমরা ওভার কনফিডেন্সে ভুগছিলাম। সেখান থেকে বেরিয়ে আসুন। এখন থেকেই যদি উঠেপড়ে লাগা যায় তাহলে নিশ্চয়ই পরিবর্তন আসবে। মানুষের কাছে গিয়ে সরকারের কাজকর্ম তুলে ধরুন। মানুষের যে ভালোবাসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ছিল সেটা আমাদের জন্য কোথায় কোথায় নষ্ট হয়েছে সেগুলি পুনুরুদ্ধার করুন। শেষে তিনি ফের বলেন, পরপর দু’টি লোকসভাতেই রামপুরহাটে ফল খারাপ হয়েছে। কোথায় গলদ হচ্ছে সেটা দেখার দরকার আছে। রামপুরহাট আমার কাছে চ্যালেঞ্জের জায়গা হয়ে উঠছে। এত উন্নয়নের পরও কেন মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সেটা পর্যালোচনার প্রয়োজন। তিনি বলেন, আশিসদা(কৃষিমন্ত্রী) খুব ভালো মানুষ। যদি এখন থেকে কেউ আমাদের জন্য আশিসদাকে ভুল বুঝছে সেটার মেরামত করুন। যাতে বিধানসভা ভোটে ফলাফল ভালো হয়। মনে রাখবেন, লোকসভায় এতগুলি বিধানসভা ছিল বলে বেঁচে গিয়েছি। বিধানসভায় সেই সুযোগ নেই। এলাকায় দলের এমএলএ থাকলে তবেই আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে। তাই এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ুন।
যদিও এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও কোনও বক্তব্য রাখেননি কৃষিমন্ত্রী। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, লোকসভা ভোট পরবর্তী এই বিধানসভা অনেক শক্ত জায়গায় এসেছে। পুরসভা, বিধানসভা দু’টি ভোটেই আমরা জয়লাভ করব। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের নিরিখে রামপুরহাট শহর ও ১ ব্লক এলাকায় প্রায় ১৪হাজারেরও বেশি ভোটে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। রামপুরহাট পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে হার হয়েছে শাসকদলের।