কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২৫জুন সন্ধ্যায় তৃণমূলের ষাটপলশা কার্যালয়ের দলীয় মিটিং চলছিল। সেই সময় এলাকার বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, সকলের হাতে অস্ত্র ছিল। এরপরই তৃণমূল কর্মীরা বেরিয়ে এলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। চলে ইট বৃষ্টি ও বোমাবাজি। ঘটনায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী জখম হন। পরে খবর পেয়ে বিশাল পুলিসবাহিনী এসে বিজেপি কর্মীদের এলাকাছাড়া করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগে ২৮জনের নামের পাশাপাশি আরও অনেকে জড়িত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ঘটনার কয়েকদিন পরে এলাকার দুই বিজেপি কর্মী সূর্যদেব ভল্লা ও অনন্তমোহন মণ্ডলকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড নলহাটির বানিওর গ্রামের বাসিন্দা বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি ধ্রুব সাহা। পরবর্তী সময়ে পুলিস মামলায় এই বিজেপি নেতাকে যুক্ত করে।
পুলিসের দাবি, জেরায় ধৃতরা আরও জানিয়েছে, ময়ূরেশ্বর এলাকায় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর পিছনে এই বিজেপি নেতার মদত রয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮সালে ময়ূরেশ্বরে একটি বাড়ির গোয়ালঘর থেকে গোমাংস উদ্ধার হওয়াকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সে সময়ে ময়ূরেশ্বরের বেজা গ্রামে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্টার সাঁটাতে দেখেন এলাকার মানুষজন। দু’টি ঘটনার পিছনে মাস্টারমাইন্ড এই ধ্রুব সাহা বলে ধৃতরা জেরায় পুলিসকে জানিয়েছে। সেই পুরনো মামলায় শনিবার গভীর রাতে নলহাটি থেকে ধ্রুব সাহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। জানা গিয়েছে, সিউড়ির ধর্না মঞ্চ থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় পুলিস গাড়ি আটকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই তাঁকে নিয়ে আসা হয় রামপুরহাট থানায়। রবিবার সকালে ময়ূরেশ্বর থানা থেকে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসে তাঁকে নিয়ে রামপুরহাট আদালতে হাজির হন। আদালতে ঢোকার মুখে ধৃত বিজেপি নেতা অবশ্য দাবি করেছেন, পুলিস তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।
জেলার পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, ধৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ রয়েছে। ময়ূরেশ্বরের ঘটনায় শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিন ধৃতের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা ৩০৭(খুনের চেষ্টা), ৩২৬(ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত), ৩২৫(ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে আঘাত), ৪৩৫(আগুন ধরিয়ে দেওয়া), ১২০বি(একত্রিত করে হামলা চালানো), ২৫ও ২৭ আর্মস অ্যাক্ট ও বিস্ফোরক আইন ৩ ও ৪ ধারা ছাড়াও একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত করে আদালতে তোলা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই আদালতে ভিড় জমাতে শুরু করে স্থানীয় বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তারা আদালত চত্বরেই জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে থাকে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আদালতে হাজির হন রামপুরহাটের এসডিপিও সৌম্যজিৎ বরুয়া, রামপুরহাট থানার আইসি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় ও ময়ূরেশ্বর থানার ওসি তপাই বিশ্বাস সহ অনেকে।
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, বীরভূম জেলা পুলিস তৃণমূলের নির্দেশে বিজেপিকে রোখার চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। দেড় মাস আগে ষাটপলশায় ছোট্ট একটা ঘটনা ঘটেছিল। সেই কেসের সঙ্গে ধ্রুব সাহাকে আর্মস অ্যাক্ট ও বিস্ফোরক আইনে গ্রেপ্তার করে জড়িয়ে দেওয়া হল। পুলিস অন্যায়ভাবে, মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসিয়েছে। তৃণমূলকে খুশি করতে নিপরাধ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে উঠেপড়ে লেগেছে পুলিস। অথচ তৃণমূলের যারা খুন সহ বিভিন্ন কেসের আসামি তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিসের খাতায় তাদের ফেরার দেখানো হচ্ছে। পুলিস একপক্ষ নিয়ে কাজ করছে। যা জনগণের কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, পুলিস পুলিসের কাজ করছে। আইন আইনের পথে চলবে।