সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ শনিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠল নানুরের মোহনপুর গ্রাম। বিজেপির অভিযোগ, এদিন তাদের দু’জন কর্মীকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করে তৃণমূলের সমর্থকরা। অন্যদিকে তৃণমূল পাল্টা অভিযোগ করে, তাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। ঘটনায় দু’পক্ষের চারজন জখম হন। তাঁদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিজেপি কর্মীদের মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বেশ কয়েক দফায় বোলপুর-নানুর রাস্তা অবরোধ করা হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সময়মতো খবর দেওয়া হলেও পুলিস ঘটনাস্থলে আসতে দেরি করে।
শুক্রবার নানুর থানার বড়া সাঁওতা পঞ্চায়েতের মোহনপুর গ্রামে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর ও তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। যদিও তাঁরা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। শনিবার সকালে বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, তাঁদের দুই কর্মী বাসে বোলপুর যাওয়ার পথে তাঁদের ব্যাপক মারধর করা হয়। মারধর করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। যার প্রতিবাদে বেশ কয়েক দফায় বোলপুর-নানুর রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি সমর্থক ও গ্রামবাসীরা। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, পুলিসকে খবর দেওয়া হলেও সময়মতো আসেনি। অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এদিন সকালে হঠাৎ বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা চড়াও হয়ে তাঁদের মারধর করতে থাকেন। শুক্রবারের ঘটনার পর ফের এদিন তাঁদের মারধর করে বিজেপি। তৃণমূলের দাবি, তাদের গ্রামে বসবাস করতে দেবেন না বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। তাই বাড়ি এসে চড়াও হয়ে মারধর করেন। উভয় পক্ষই নানুর থানায় গিয়ে ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়ে এসেছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর গ্রামে আসে নানুর থানার পুলিস‌। তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। অন্যদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় দু’পক্ষের চারজন জখম হয়েছেন। তাঁদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে এক তৃণমূল সমর্থককে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যদিও তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় জখম তৃণমূল সমর্থক মাখন দাস বলেন, লোকসভা ভোটে ভালো ফল করার পর থেকে বিজেপি কর্মীরা আমাদের হুমকি দিচ্ছে। তৃণমূল ছেড়ে দিতে বলছে। না হলে গ্রাম ছেড়ে দিতে বলছে। এদিন সকালে হঠাৎ আমাদের বাড়িতে এসে বাঁশ, লাঠি নিয়ে মারধর করতে শুরু করে। আমার মাথা ফেটে যায়।
মোহনপুর গ্রামের বিজেপি সমর্থক কৃষ্ণা মেটে বলেন, তৃণমূল কর্মীরা আমাদের যখন তখন মারধর করেন, খারাপ ব্যবহার করেন। তবু, গ্রামে শান্তি থাকবে বলে আমরা সব সহ্য করি। ফের এদিন সকালে আমাদের দু’জন সমর্থককে বাস থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। পুলিসকে জানালেও কোনও কাজ হচ্ছে না। আমাদের কর্মীদের মারধর করে নিজেরাই মাথা ফাটিয়ে মিথ্যা দোষ দিচ্ছে।