পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
তারাপীঠে পুজো দেওয়ার উদ্দেশ্যে শুক্রবার গভীর রাতে সপরিবারে তারাপীঠে এসে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী। বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিবাসের পর এদিন সকাল ১১টা নাগাদ তিনি তারামায়ের কাছে পুজো নিবেদন করেন। মন্দিরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান টিআরডিএর চেয়ারম্যান তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, তারাপীঠে কয়েকশো হোটেল, নিত্যদিন হাজার হাজার পুণ্যার্থী এই সিদ্ধপীঠে আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু, এখানে কোনও দমকল কেন্দ্র না থাকায় কোনও অগ্নিকাণ্ড বা বিপর্যয় ঘটলে ন’কিলোমিটার দুরে রামপুরহাটে থাকা দমকল কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। অত দূর থেকে দমকলের গাড়ি আসতে সময় লাগায় অগ্নিকাণ্ড ভয়বাহ আকার ধারণ করে। এছাড়া কোনও পুণ্যার্থী দ্বারকার জলে ডুবে গেলে তাঁকে উদ্ধারে সময় লেগে যায়। এদিন দমকল মন্ত্রীর কাছে তারাপীঠের সেই সমস্যার কথা তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি তারাপীঠে দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য খাস জায়গা চিহ্নিত করতে রামপুরহাট-২ ব্লকের বিএলএলআরও সৌমেন্দ্রনাথ সাহাকেও তিনি ডেকে নেন। পরে টিআরডিএর অফিসে কৃষিমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুজিত বসু। তিনি প্রথমেই আশিসবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন। পরে বলেন, তারাপীঠের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আশিসবাবু এই তীর্থভূমিতে দমকল কেন্দ্র করার জন্য একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। যেটা একান্তই প্রয়োজন। জমি চিহ্নিত করবে টিআরডিএ। ইতিমধ্যে রাজ্যে ১৪২টি দমকল কেন্দ্র আছে। তার মধ্যে এই জেলার তিনটি মহকুমা বোলপুর, সিউড়ি ও রামপুরহাটে দমকল কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া সাঁইথিয়ায় দমকল কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তা চালু করা হবে। এই জেলায় দুবরাজপুর, নলহাটি ও মুরারইয়ে দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া রাজ্যে বেশ কিছু দমকল কেন্দ্রের কাজ চলছে। মার্চের মধ্যেই সেগুলি চালু করা হবে।
সুজিতবাবু বলেন, গতবার কৌশিকী অমাবস্যার সময় দ্বারকার জলে ডুবে এক পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। তাই এবার আশিসবাবুর দাবিমতো তারাপীঠে কৌশিকীর সময় ডুবুরির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিকে দীর্ঘদিন থেকেই তারাপীঠে দমকলের একটি গাড়ি রাখার জন্য দাবি করে আসছে মন্দির কমিটি। সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাব পাঠালে আমরা বিবেচনা করে দেখব।
জানা গিয়েছে, তারাপীঠে দুই পাম্প বিশিষ্ট দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার জন্য দরকার ১০-১২কাঠা জমি। সেই জমি জোগাড় করে ডিএমের মাধ্যমে দপ্তরে জানালে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন দমকলমন্ত্রী। এদিন উপস্থিত বিএলএলআরওকে দ্রুত সেই জমি চিহ্নিতকরণের জন্য বলেন কৃষিমন্ত্রী। আশিসবাবু বলেন, শুধু দমকল কেন্দ্র নয়, কয়েকটি দপ্তর থেকে এখানে গেস্ট হাউস করতে চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এছাড়া এখানে ফার্মার্স গেস্ট হাউস করার কথা রয়েছে। সেইমতো বিএলএলআরওকে তারাপীঠ মন্দির থেকে এক বা দেড় কিলোমিটারের মধ্যে উপযুক্ত খাস জায়গা চিহ্নিত করার জন্য বলেছি। বিএলএলআরও আগামী মঙ্গলবারের মধ্যেই সেই জায়গা চিহ্নিত করে টিআরডিএকে জানাবেন বলে জানান। অবশেষে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে দেখে খুশি তীর্থভূমির বাসিন্দারা।