দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
ছোটনাগপুর রেঞ্জের নলহাটি পাহাড়। পাহাড়ের উপরে জঙ্গলে ঘেরা ৫১পীঠের অন্যতম সতীপীঠ মা নলাটেশ্বরী মন্দির। মন্দির সংলগ্ন পাহাড়ে রয়েছে বর্গিডাঙা। বর্গি দমনের উদ্দেশ্যে নবাব আলিবর্দির নৌসেনাধ্যক্ষ শহিদ আনার সাহেবের সমাধিও আছে এই পাহাড়ে। হিন্দু-মুসলিম মৈত্রীর এই নির্দশনকে সামনে রেখেই দুর্গাপুজোর আনন্দে মাতেন নলহাটির উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। বিশাল বিগ বাজেটের না হলেও ধীরে ধীরে শহরের পুজো কমিটিগুলি কিন্তু নিজেদের সাধ্যমতো খরচ করে থিমের দিকে ঝুঁকছে।
যেমন প্রতিবছরই নতুন কিছু চমক থাকে নলহাটির উদয়ন সংঘের। চিরাচরিত ঐতিহ্য ও সাবেকিয়ানা বজায় থাকছে এবারও। পুজোর ৩০বছরে তারা আদিবাসী গ্রাম তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছে। বিলুপ্ত প্রায় বাঁশের কুলো, ঝুড়ি, ইত্যাদি দিয়ে দিয়ে তারা ৪৫ফুট বাই ৫৫ফুটের মণ্ডপ গড়ে তুলছে। তেমনি পোড়া মাটির আদলে থাকছে মায়ের সাবেকি মূর্তি। প্লাস্টিক বর্জন করে পরিবেশবান্ধব পুজো মানুষের কাছে তুলে ধরতে জোর প্রস্তুতি চলছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে প্রকাশ ফুলমালি বলেন, মণ্ডপের আবহ দেখে অনেকে মনে করতেই পারে কোন আদিবাসী গ্রামে চলে এসেছি। আলোকসজ্জায় থাকবে নতুনত্ব।
অন্যদিকে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে পুরনো রাজবাড়ির আদলে মণ্ডপ গড়ে উঠছে মিলনী সংঘ ক্লাবে। শোলার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে টেরাকোটার কাজ। পুজো কমিটির সম্পাদক রাহুল বিশ্বাস বলেন, আমরা অনেকেই খরচ করে দূরবর্তী স্থানের রাজবাড়ি দেখতে যাই। জানতে পারি সভ্যতা সংস্কৃতির ইতিহাস। কিন্তু বর্তমানে ফ্ল্যাট কালচারে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই সমস্ত রাজবাড়ি। তাই মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে রাজবাড়ি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ৬০ফুট মণ্ডপের ভিতরে রাজারানির আদলে থাকবে দেবীদুর্গা।
তবে, যে কমিটির হাত ধরে নলহাটিতে থিম পুজোর প্রবেশ সেই আপনজন ক্লাবের এবারের থিম ‘কলসযাত্রা’। প্লাস্টিক বর্জন করে প্লাই ও কাপড় দিয়ে ৬৪ফুট উচ্চতার বিশাল কলসির আদলে তারা এবার মণ্ডপ সাজিয়ে তুলছে। ডাকের সাজের প্রতিমা ও আলোকসজ্জা দর্শকদের নজর কাড়বে বলে আশাবাদী ক্লাবের সভাপতি দীপ্তিমান সিনহা। এছাড়া পুজোর দিনগুলিতে থাকছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকছে অন্নভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থাও।
শহরের প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম চালবাজার সর্বজনীন দুর্গাৎসব। পরিচালনায় হিন্দ ক্লাব। এবার তাঁদের পুজো ১০৪ বছরে পা দিল। গুহার ভিতরে শিবের মন্দিরের আদলে মণ্ডপসজ্জা সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। বারোয়ারি ডাকের সাজের প্রতিমাই এখানকার মূল আকর্ষণ। ক্লাবের অন্যতম কর্তা বিষ্ণুপ্রসাদ ভকত বলেন, মণ্ডপ থেকে আলোকসজ্জা সবেতেই থাকছে নতুনত্ব।
নলহাটি স্টেশন সংলগ্ন বিধুপাড়ার রয়্যাল ক্লাব কয়েক বছর ধরে বিশেষ কোনও একটি ভাবনাকে ধরে পুজো করার চেষ্টা করছে। এবার তাদের পুজো ৩০বছর পূর্ণ হবে। এবার তারা বেলুড় মঠের আদলে ৮০ফুট উচ্চতার মণ্ডপ গড়ে তুলছে। থাকবে সাবেকি প্রতিমা। তৃণমূলের নলহাটি শহর সভাপতি তথা পুজো কমিটির সভাপতি রাকেশ সিং বলেন, আলোকসজ্জা শিশুদের নজর কাড়বে। তিনি বলেন, বাজেট প্রায় চার লক্ষ টাকা। এবার দর্শকদের মন জয় আমরাই করব। প্রতিবারের মতো এবারও দুঃস্থদের বস্ত্রদানকেই আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি।