ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
গত মে মাসেই শেষ হয়েছে লোকসভা নির্বাচন। এই পূর্ব বর্ধমান জেলার অধীনে রয়েছে বর্ধমান পূর্ব এবং বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র। ২০১৪ সালে এই দু’টি লোকসভায় তৃণমূল ঘাসফুল ফোটালেও সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। এই কেন্দ্রে পদ্মফুল ফুটিয়েছে বিজেপি। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার মধ্যে বর্ধমান দক্ষিণ, বর্ধমান উত্তর, মন্তেশ্বর, ভাতার, গলসি, দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম এই সাতটি বিধানসভা রয়েছে। তৃণমূল বর্ধমান দক্ষিণ থেকে ১৩৩৮ ভোট, মন্তেশ্বর থেকে ২৭ হাজার ৪৩০ ভোট, বর্ধমান উত্তর বিধানসভা থেকে ২৮ হাজার ৪৬ ভোট এবং ভাতার বিধানসভা থেকে ২৬ হাজার ৪৬৪ ভোট লিড পেলেও গলসি, দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম থেকে লিড নিয়েই জয়ী হয়েছে বিজেপি।
যদিও দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম এই দু’টি বিধানসভা পশ্চিম বর্ধমান জেলার অধীনে। গলসি পূর্ব বর্ধমানের অধীনে রয়েছে। তবুও জেলার প্রতিটি বিধানসভাতেই সাধারণ মানুষের সঙ্গ জনসংযোগ বাড়িয়ে তৃণমূল নিজেদের সংগঠন বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে। দিদিকে বলো জনসংযোগ কর্মসূচিতে বিধায়কদের পর এবার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি এবং শহর সভাপতিরা প্রতি বুথে বুথে যাবেন। এমন নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যুব সভাপতিরা এলাকায় যাচ্ছেন। মানুষের সঙ্গে তাঁরা কথাও বলছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট যা করেনি, তৃণমূল সরকার তা করে দেখিয়েছি। এলাকার আমুল পরিবর্তনও হয়েছে। প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু, তারপরেও মানুষ মখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই ওই মানুষদের ফিরিয়ে আনতে হবে। দলের বহু নেতার আচার-আচরণ নিয়েও মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। অনেকেই শাসকদলের নেতা হওয়ায় গত কয়েক বছরে ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ও হয়ে গিয়েছেন। তাই ভুল করে থাকলে মানুষের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে তৃণমূল। কারণ, মানুষের সমর্থন ছাড়া কোনও সরকারই টিকে থাকে না। তাই ‘ক্ষমার অস্ত্রে’ মানুষের মন ফেরাতে মরিয়া শাসকদল। রাজনৈতিক মহলের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে দলের বিপর্যয়ের ফলেই জনসংযোগ বাড়িয়ে বুথস্তর থেকে সংগঠন ঢেলে সাজাতে চাইছে তৃণমূল। তাই এই নয়া নির্দেশিকা।
প্রসঙ্গত, সোমবার বর্ধমানে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ সভাধিপতি, মেন্টর, কমার্ধ্যক্ষ, সকল সদস্য-সদস্যাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন দলের পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি স্বপন দেবনাথ। বিধায়কের পর দলের সভাপতিরা যেমন দিদিকে বলো কর্মসূচিতে মাঠে নামছেন, এবার থেকে জেলা পরিষদের সকলকেও নিজের নিজের এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাঁরাও যেন এলাকায় গিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর কাজ করেন।
ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশিকা প্রসঙ্গে দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, দিদিকে বলো কর্মসূচিতে আমাদের জনসংযোগ কর্মসূচি ভালোই হচ্ছে। দলের নেতারা মানুষের কাছে যাচ্ছেন কথা বলছেন। তাই আমরা দলের নেতাদের বলেছি, কেউ যদি ভুল করে থাকেন, তাহলে তিনি যেন মানুষের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চান। ক্ষমা চাইলে কোনও আপত্তি যেন না থাকে। আমরা নিশ্চিত, কেউ যদি নিজের ভুল স্বীকার করেন, তাহলে এলাকার মানুষ তাঁকে ক্ষমাও করে দেবেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রয়োজন পড়লে বিরোধীদের কাছেও যেতে হবে। কিছু ভুল করে থাকলে তাঁদের কাছে গিয়েও ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। এই নির্দেশের কথা, আমি বাইরে সভা-সমিতিতে মাইকেও বলছি। কারণ, ক্ষমা চাওয়াতে লুকোনোর কিছু নেই। বাংলার সাধারণ মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁরা আগামীদিনেও থাকবেন।