ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, এতদিন জেলার ব্লক সভাপতিরা মূলত ভোটার তালিকা তৈরিতে নজর দিতেন। এবার আমরা এই কাজে বিধায়কদের যুক্ত করেছি। এক মাস পর জেলা কমিটির কাছে তাঁদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, বিধায়কদের কেন যুক্ত করা হল? তিনি বলেন, আসলে কিছু জায়গায় বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের সমন্বয়ের অভাব ছিল। যৌথভাবে তাঁদের কাজ করার বার্তা দিতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, এই কাজে আর কোনও সমস্যা হবে না।
চলতি মাসে জেলাজুড়ে ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন, বিয়োজন, সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে যে কেউ সেই কাজ করতে পারবেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোবাইল ফোনেও সেই সুবিধা মিলবে। ভোটার তালিকায় নাম তোলার ছুতোয় ফের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করার সুযোগ মিলবে। এমনিতেই লোকসভা নির্বাচনের পর জেলার একাধিক ব্লকে বিজেপি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ভোটার তালিকায় বিরোধীরা যাতে পালে হাওয়া না পায় তার দিকে কড়া নজরদারি চালানোর লক্ষ্য নিয়ে এবার জেলা নেতৃত্ব সেদিকে নজর দিয়েছে। জেলা নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকায় দলীয় নেতা, জনপ্রতিনিধিদের এবার যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনিতেই এই জেলার একাধিক ব্লকে বিধায়ক, ব্লক সভাপতিদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। কয়েকদিন আগে দলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর কাছে এই বিষয়ে নালিশ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে জেলার একাধিক ব্লকে স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি ঠিক করার ক্ষেত্রে বিধায়করা নিজেদের মতো করে একতরফা নামের তালিকা তৈরি করেছে। ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে অনেকে আলোচনা পর্যন্ত করেননি। এনিয়ে জেলার একাধিক ব্লক সভাপতি ক্ষুব্ধ রয়েছেন। ব্লক সভাপতি, বিধায়কদের সমন্বয় রেখে কাজ করার জন্য দলের পর্যবেক্ষক নির্দেশ দিয়েছিলেন। ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে বিধায়কদের সমন্বয়ের অভাব দূর করতে এবার জেলা নেতৃত্ব উদ্যোগী হয়েছে। ভোটার তালিকা ইস্যুকে সামনে রেখে ব্লকস্তরে সাংগঠনের প্রধান, বিধায়ককে যৌথভাবে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে তাঁরা যৌথভাবে কতটা কাজ করলেন, তার রিপোর্টও চাওয়া হবে। এমনিতেই জেলার বহু ব্লকে এখন বিজেপি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে হিড়িক পড়ে গিয়েছে। ফলে, ভোটার তালিকায় শাসক দলের পক্ষে থাকা লোকজনের নাম চাপ সৃষ্টি করে বাদ দেওয়া হচ্ছে কি না, তা নজরদারির প্রয়োজন বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। ভুয়ো ভোটারের নাম ঠিকমতো বিয়োজন হচ্ছে কি না, তা দেখাও প্রয়োজন। ব্লক সভাপতি, বিধায়কদের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে সেই কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হবে। সেদিকে তাকিয়েই সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে জেলার ২১ জন ব্লক সভাপতি, সাতজন টাউন সভাপতি, সংসদ সদস্য মানস ভুঁইয়া, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, দলের কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, দীনেন রায় সহ জেলার অধিকাংশ বিধায়ক এবং যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। ভোটার তালিকার পাশাপাশি এদিন এনআরসি ইস্যুতে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, ১২ তারিখ জেলার সব ব্লকে এনআরসি এবং আর্থিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে। এছাড়া এনআরসি কতটা ভয়াবহ, তা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে এক লক্ষ লিফলেট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই জেলার সর্বত্র তা বিলি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৬ তারিখ ওই একই ইস্যুতে মেদিনীপুর শহরে বিশাল মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।