ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এদিন সকালে হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তরে এসে পৌঁছন মৎস্য বিজ্ঞানী। তাঁকে হলদিয়া ব্লকের বিভিন্ন মৎস্য খামার ঘুরিয়ে দেখান জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী ও ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমনকুমার সাহু। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এনবিএফজিআরের ডিরেক্টর কুলদীপ কুমার লাল আমাকে ফোন করে হলদিয়া ব্লকের মাছ চাষ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। তিনি কেন্দ্রীয় বিভিন্ন মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে হলদিয়া ব্লকে বিভিন্ন দেশি মাছের সংরক্ষণ ও তার বাণিজ্যিক চাষের খবর পেয়েই যোগাযোগ করেন। এবিষয়ে বিস্তৃতভাবে জানতে আগ্রহী হন। সেই সূত্রেই হলদিয়ার মাছ চাষ সরেজমিনে দেখতে এদিন মৎস্য খামার পরিদর্শনে আসেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানী।
টোটো ও বাইকে চেপে এদিন হলদিয়ার বিভিন্ন মৎস্য খামার ঘুরে দেখেন এবং মাছ চাষ পদ্ধতির ভিডিওগ্রাফিও করেন মৎস্য বিজ্ঞানী। তিনি বসানচকের মাছ চাষি শরৎকুমার ভৌমিকের খামারে গিয়ে মণিপুরের পেংবা মাছ ও কলসিতে দেশীয় পাবদা চাষের পদ্ধতি দেখে রীতিমতো খুশি। মিশ্র চাষ পদ্ধতিতে মণিপুরের হারিয়ে যেতে বসা পেংবা মাছের চাষ হচ্ছে হলদিয়ার কয়েকটি মৎস্য খামারে। সেই মাছের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হচ্ছে কি না তা মাপজোক করে দেখেন ওই বিজ্ঞানী। ওই এলাকাতেই শুভ্রজ্যোতি সাহুর খামারে গিয়ে দেশি মাগুর ও গুলসা ট্যাংরা কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এবং মাছ উৎপাদনে জৈব চাষ পদ্ধতির প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন।
ওই মৎস্য বিজ্ঞানী বলেন, এনবিএফজেআর মূলত বিভিন্ন দেশি মাছের প্রজাতির জিন সংরক্ষণ(ইনটেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টি প্রটেকশন), সুস্থায়ী ব্যবহার ও উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে কাজকর্ম করে। অনেক মাছের প্রজাতি হারিয়ে যায় নানা কারণে। কীভাবে তাকে সংরক্ষণ করা যায়, সেবিষয়ে গবেষণা চলছে। হলদিয়ার গ্রামাঞ্চলের মৎস্য খামারগুলিতে সরকারি উদ্যোগে যেভাবে দেশি মাছের সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। দেশি মাছ সংরক্ষণ ও চাষে এখানকার বাস্তবসম্মত পদ্ধতিগুলি আমাদের গবেষণার কাজে লাগবে। এবিষয়ে মাছ চাষি অরূপ মন্ত্রী, নারায়ণ বর্মন, তপন বর্মন ও মদন জানাদের খামারে গিয়ে বিস্তারিত খোঁজও নেন।
ব্লকের মৎস্য আধিকারিক বলেন, ঈষৎ নোনা ও মিষ্টি দু’ধরনের জলের সুযোগ থাকায় হলদিয়ায় সরপুঁটি, মাগুর, শিঙ্গি, পেংবা, পাবদার মতো হারিয়ে যেতে বসা দেশি মাছের সঙ্গে নতুন প্রজাতির কার্প জাতীয় আমুর কার্প, মিল্ক ফিশ বা গিফট তেলাপিয়া চাষ হচ্ছে। নোনাজলের ভেড়িতে ভেনামির সঙ্গে আমেরিকান পমফ্রেটের চাষও শুরু হয়েছে। হলদিয়ায় মিশ্র পদ্ধতিতে মাছের বিভিন্ন প্রজাতির চাষ বৈচিত্র এখন দেশের নজরে এসেছে। এজন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মিষ্টিজলে মৎস্য গবেষণা সংস্থা সিফা হলদিয়ার খামার চাষিদের স্বীকৃতি দিয়েছে।
মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময়বাবু বলেন, শিল্পের পাশাপাশি হলদিয়াকে এবার মাছ চাষের জন্য দেশের মানুষ চিনছেন, এটাই গর্বের বিষয়। রাজ্য সরকার এই ব্লক ও জেলার মৎস্যজীবীদের আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা দেয়। এছাড়া সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মাছ চাষে সহযোগিতা চেষ্টা করা হচ্ছে।