ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
আসানসোল ও দুর্গাপুরের বহু পুজো মণ্ডপের খ্যাতি রাজ্যজুড়ে। বহু বছর একাধিক মণ্ডপ রাজ্যের সেরা আলোকসজ্জা, মণ্ডপসজ্জার পুরস্কার পেয়েছে। তাই দুর্গাপুর, আসানসোলের পুজো দেখতে মুখিয়ে থাকেন দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলার মানুষ। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে মানুষ মন খুলে অর্থব্যয় করে। পুজো মণ্ডপগুলিতেও বহু ব্যবসায়ী লাগামছাড়া টাকা ঢেলে মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা করেন। পুজোয় অর্থের আমদানি নিয়ে এতদিন খুব বেশি মাথা ব্যথা ছিল না কারও। তাই পুজো উদ্যোক্তারাও খোলা মনে বলতেন পুজোর খরচের কথা। কিন্তু দিন বদলাচ্ছে, এখন আয়কর দপ্তরের নজরে বড় পুজোগুলিও। ইতিমধ্যেই কলকাতার পুজো কমিটিগুলিকে আয়কর দপ্তরের চিঠি পাঠানো নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমে তার প্রতিবাদ করেছেন। চাপে কিছুটা পিছু হটেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কলকাতায় এসে পুজো ভালো করে উপভোগ করার বার্তা দেওয়ায় অনেকেরই ধারণা, ইঙ্গিতে তিনি পুজো কমিটিগুলিকে নিশ্চিন্ত করেছেন। কিন্তু, চিন্তামুক্ত হতে পারেননি পুজোর কর্মকর্তারা। তাই এখনও কিছুটা সমঝে চলতে চাইছেন তাঁরা।
যেমন দুর্গাপুর টাউনশিপের একটি বিখ্যাত পুজোর উদ্যোক্তারা, আলাপচারিতায় জানালেন, এবার তাঁদের থিম ভাবনার কথা। বিদেশি সংস্কৃতি ধাঁচে মণ্ডপসজ্জা থেকে শুরু করে বিদেশি আলোর ছটার কথা সবই বলেন। কিন্তু, বাজেটের কথা জিজ্ঞাসা করতেই উত্তর, এই তো সমস্যা করে দিলেন। লিখে দিন ২৩ বা ২৪ লক্ষ। একইভাবে বেনাচিতির একটি খ্যাতনামা পুজো কমিটির তরফে মণ্ডপের নতুনত্ব নিয়ে বিস্তারিত জানানোর পর বাজেটের প্রসঙ্গ আসতেই উত্তর এল, কয়েক বছর আগেই সূর্বণজয়ন্তী বছর গিয়েছে। এবার বেশি খরচ করছি না। কিন্তু এত ভালো থিম কীভাবে সম্ভব, তা বোধ্যগম্য হওয়া কঠিন। একইভাবে দুর্গাপুর স্টেশন বাজার এলাকা হোক অথবা গোপলমাঠের পুজো কমিটি প্রকৃত খরচ জানাতে রাজি নয় কোনও পক্ষই।
একই চিত্র আসানসোলের ক্ষেত্রেও। বারাবনি ব্লকের এক বৃহৎ পুজোর কর্মকর্তারা তো আবার বাজেট নিয়ে প্রকাশ্যে কি বলা হবে তা নিয়ে মহড়া দিচ্ছিলেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়, বাজেট নিয়ে কেউ স্পষ্ট মুখ খুলবেন না। তাই পুজোর আয়োজনের খুঁটিনাটি জানালেও বাজেট নিয়ে প্রশ্ন করতেই উত্তর এল শিল্পী আমাদের নিজের লোক, যা দেব তাই নেবেন। একইভাবে আসোনসোলের কলোনির পুজোর খ্যাতি বহু পুরনো। বিশাল মাঠজুড়ে পুজোর আয়োজন হলেও বাজেটের কথা উঠতেই উত্তর এল ২০-২২ লক্ষের মধ্যেই হবে। উদ্যোক্তাদের একাংশের দাবি, আগের মতো যেমন খুশি টাকা আদায় করে খরচ করা যাবে না। রীতিমতো হিসেব রাখতে হচ্ছে। না হলে কখন নোটিস দেওয়া হবে বলা যায় না।