কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটির যশিডির বাসিন্দা ভগীরথ মুখোপাধ্যায় স্ত্রী ও মেয়েকে বাইকে নিয়ে এদিন রঘুনাথপুরের নন্দুয়াড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়ি আসছিলেন। সেই সময় শহরের চৌ-মাথা মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, ভগীরথবাবু তাঁর স্ত্রী বনমালাদেবী ও মেয়ে পিঙ্কিকে চৌ-মাথার মোড়ের বাঁকের কাছে স্কুটার থেকে নামিয়ে দিয়ে মিষ্টি কিনতে যান। সেই সময় পিছনের দিক থেকে আসা ডাম্পারটি মা ও মেয়েকে পিষে দেয়। গাড়িতে কোনও খালাসি না থাকার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা তেড়ে এলে গাড়ি ছেড়ে চালক চম্পট দেয়। এরপর ঘাতক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পাশাপাশি অন্যান্য গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিসকে দেহ দু’টি তুলতে দিলেও যান নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে অবরোধ করা হয়।
অবরোধ ও ঝামেলার খবর পেয়ে রঘুনাথপুর থানার পুলিস আধিকারিক দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আদ্রা, পাড়া, সাঁতুড়ি, নিতুড়িয়া থানার বিশাল পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। চলে দীর্ঘ আলোচনা। মৃতের পরিবারকে সবরকম পুলিসি সহায়তা ও ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়। যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পুলিস আগামীদিন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও জানান। কিন্তু, তাতেও অবরোধ না উঠলে ক্ষিপ্ত জনতাকে হটাতে পুলিস মৃদু লাঠিচার্জ করে। আড়াই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে ঘাতক গাড়ির আগুন নেভায়। পুলিস ঘাতক গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা পরেশ তন্তুবায়, নিমাই মণ্ডল বলেন, রঘুনাথপুর শহরের যান নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই। এখানে সবসময় ওভারলোডিং ডাম্পার দাপিয়ে বেড়ায়। পুলিস সব জেনেও চুপ থাকে। পুলিসের হাতে মোটা টাকা তোলা দিয়ে ডাম্পারগুলি ওভারলোডেড মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করে। শহরের রাস্তায় একটু অন্যমনস্ক হলেই ঘটে দুর্ঘটনা। শুধু তাই নয়, পুলিস নিজেদের ডিউটি ছেড়ে দিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে ট্রাফিকের কাজ করায়। শহরের বুকে ট্রাফিক লাইট বসানো হলেও পুলিসের পক্ষ থেকে তা ঠিকমতো চালনা করা হয় না।
এদিকে, শহরের যানজট নিয়ে সরব হয়েছেন নাগরিক মঞ্চের সদস্যরাও। তাঁদের দাবি, যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে মহকুমা শাসক ও মহকুমা পুলিস আধিকারিককে বহুবার স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনও কাজ হয়নি।
এবিষয়ে বনমালাদেবীর স্বামী তথা পিঙ্কির বাবা ভগীরথবাবু বলেন, এদিন আমি আর এক মেয়ের বাড়ি রঘুনাথপুরে আসছিলাম। ওদের চৌ-মাথার মোড়ে রাস্তার এক পাশে নামিয়ে দিয়ে মিষ্টি কিনতে যাই। সেই সময় ডাম্পারটি ওদের পিষে দেয়। আমার সব শেষ হয়ে গেল। একথা বলার পরই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। বিষয়টি নিয়ে পুরুলিয়ার পুলিস সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ঘাতক গাড়িটিকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।