দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
জন্মাষ্টমী ও নন্দোৎসবের দিনক্ষণ নিয়ে দড়ি টানাটানির পিছনে রয়েছে ধর্মীয় স্মার্ত এবং হরিভক্তি মত। গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা ও বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার মত পার্থক্য। গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে, অষ্টমী তিথি শুরু ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত তিনটে ২৭ মিনিটে। শেষ ২৩ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে ৩ তিনটে পর্যন্ত। ফলে ২৩ আগস্ট শুক্রবার নিশীথকাল রাত ১১টা ৩৯ মিনিটের পরে রাত ১২টা ২৭ মিনিটের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণদেবাবির্ভাব। অন্যদিকে, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, অষ্টমী তিথি আরম্ভ ২৩ আগস্ট শুক্রবার সকাল ৮টা ৯ মিনিট। অষ্টমী তিথি শেষ ২৪ আগস্ট শনিবার সকাল ৮টা ৩২ মিনিট নাগাদ। ফলে ২৪ আগস্ট শনিবার শ্রীকৃষ্ণদেবাবির্ভাব।
পিএম বাগচি পঞ্জিকার ব্যবস্থাপক ও নবদ্বীপের রাজলক্ষ্মী বিদ্যাপীঠ টোলের অধ্যক্ষ স্মরণকুমার কাব্যব্যাকরণ তীর্থ বলেন, দু’টি মতানুসারে ধর্মীয় উৎসব পালন হয়। একটি যারা হরিভক্তি বিলাস গ্রন্থের নিয়ম কানুন মেনে চলেন। সেই মতবাদকে বলে বৈষ্ণব মতবাদ। এই মতানুযায়ী শ্রীকৃষ্ণের জন্ম শনিবার। নন্দোৎসব হবে রবিবার। আর একটি মত হল স্মার্ত। স্মৃতি শাস্ত্রের নিয়মানুযায়ী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এই মতানুযায়ী শ্রীকৃষ্ণের জন্ম শুক্রবার। বিশুদ্ধ হিন্দু পঞ্জিকা মতে, চান্দ্র শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়।
নবদ্বীপ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের সহ সভাপতি ও বলদেব সঙ্ঘের সম্পাদক কিশোর গোস্বামী বলেন, ২৩ আগস্ট শুক্রবার, অষ্টমী রাত্রি ৩টে ৩০ মিনিট পর্যন্ত স্মার্ত ও গোস্বামী মতে শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী। নবদ্বীপের বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, ভগবানের তো জন্মদিন হয় না, আবির্ভূত হন। তবু যেহেতু দেবকীর কোলে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাই আমরা জন্মদিন বলি। আর অষ্টমী তিথি বলেই জন্মাষ্টমী বলি। নবদ্বীপে ধামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরে সমারোহে জন্মাষ্টমী উদযাপন করা হবে শুক্রবার। নবদ্বীপের ধামেশ্বর মহাপ্রভুর মন্দিরে বিষ্ণুপ্রিয়াসেবিত মহাপ্রভুর দারু বিগ্রহকে শ্রীকৃষ্ণ মনে করে জন্মাষ্টমীর উৎসব পালিত হয়। এখানে শ্রীকৃষ্ণের বদলে মহাভিষেক হয় মহাপ্রভুর। জগন্নাথ মিশ্র সেবিত শালগ্রাম শিলা রাজরাজেশ্বরকে মহাস্নান করানো হয়। রাধারমণবাগ সমাজবাড়ির ঠাকুরদাস বাবাজি বলেন, বিশুদ্ধ বৃন্দাবনী ঘরানায় পালিত হয় জন্মাষ্টমী। একইভাবে নবদ্বীপের হরিসভা মন্দির, চৈতন্য জন্মস্থান আশ্রম, চৈতন্য সারস্বত মঠের মতো দেড়শোর বেশি মন্দিরেও সাড়ম্বরে পালিত হয়।
নানাবিধ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মায়াপুরে ইসকন মন্দির এবং বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরে উদযাপিত হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব। ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ মহারাজ বলেন, শুক্রবার মায়াপুরের ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দিরে হবে অধিবাস উৎসব। ভোর থেকে ইসকন মন্দির প্রাঙ্গণে চলবে মঙ্গল আরতি, ভাগবত পাঠ, নাম সংকীর্তন। শনিবার হবে জন্মাষ্টমী পালন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দেশ-বিদেশের কয়েক হাজার তীর্থযাত্রী ও পর্যটক উপস্থিত হয়েছেন মায়াপুর ও নবদ্বীপে।
অন্যদিকে, শান্তিপুরেও জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দিরকে সাজানো হচ্ছে। জন্মাষ্টমীর জন্য শান্তিপুর শহরের কাশ্যপপাড়া মোড়ে প্রতিবন্ধী যুবক যুবতীদের নিজেদের হাতে বানানো নারকেলের নাড়ু ও তালের বড়ার বিক্রি করছে। এজন্য বিক্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।