কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসক দলের মুখ পুড়িয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা। জেলার দু’টি লোকসভা আসনের মধ্যে একটিতেও তারা জয়ের মুখ দেখেনি। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর পদত্যাগ করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন দাসু। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা পর্যবেক্ষক করেন ফিরহাদ হাকিমকে। এরপর অজয়, দামোদর দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গিয়েছে। জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারির নেতৃত্বে দল কেন্দ্রীয় সরকারের বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক থেকে শুধু করে দলীয় বিধায়করা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন, কার্ড বিলি, রাত্রিযাপন করছেন। সবই হয়েছে, কিন্তু ভোটের পর এই প্রথম কাল, শুক্রবার পর্যবেক্ষক জেলার সর্বস্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন। যারজন্য দলীয় স্তরে বৈঠকটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ওইদিনের বৈঠকে ডাকা হয়েছে পঞ্চায়েত সদস্য থেকে জেলা পরিষদ সদস্য, সভাধিপতি, এমএলএ থেকে শুরু করে শাসক দলের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিদেরই। অঞ্চল সভাপতি থেকে শুরু করে ব্লক সভাপতি সহ স্থানীয় সব নেতৃত্বই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে ব্লক সভাপতিরা দায়িত্বে থাকলেও বাকি সব কমিটিই এখানে ভাঙা রয়েছে। তাই সেই সব কমিটি গঠনে পর্যবেক্ষক কী অবস্থান নেন তাও দেখার রয়েছে। এছাড়াও জেলায় থাকা একাধিক হেভিওয়েট নেতার ইগোর লড়াইকে কতটা সীমিত করতে পারেন পুরমন্ত্রী তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা ভোটে একাধিক জায়গায় দলের নেতারাই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কী টোটকায় তিনি সবাইকে একছাতার তলায় নিয়ে আসবেন সেটাই দেখার।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক বৈঠকের পাশাপাশি ওইদিন প্রশাসনিক স্তরেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবেন পুরমন্ত্রী। জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্য সরকারকে তিনটি বড় শহরকে মডেল সিটি আখ্যা দিয়ে ছ’মাসের মধ্যে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট রুল, ২০১৬কে সম্পূর্ণ রূপে লাগু করার কথা জানায়। দুর্গাপুর ও আসানসোল দু’টি শহরকেই রাজ্য সরকার মডেল সিটির তকমা দিয়েছে। অর্থাৎ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, অক্টোবরের মধ্যেই এনিয়ে কাজ শেষ হওয়ার কথা। যা নিয়ে পুরকর্তৃপক্ষের ঘুম ছুটেছে। এবার পুরো বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করতে আসছেন পুরমন্ত্রী। সঙ্গে থাকবেন দপ্তরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্ত, রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থার অধিকর্তা সহ উচ্চ পদস্থ সচিব স্তরের আমলারা। বাড়ির বর্জ্যকে বাড়িতেই পচনশীল ও অপচনশীল ও ডোমেস্টিক হ্যাজার্ড রূপে আলাদা করে তা পুরসভার টিপারগুলির আলাদা চেম্বারে সংগ্রহ করা। পরে তা থেকে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্টে সার, জৈব গ্যাস সহ নানা উপাদান প্রস্তুত করার লম্বা প্রক্রিয়ায় পুরসভার কাউন্সিলারদের কী ভূমিকা। মানুষকে সচেতন করতে তাঁদের কী কী করতে হবে সব নিয়ে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে।
জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর জেলার পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম প্রথমবার জেলার সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করবেন। অঞ্চল সভাপতি থেকে শুরু করে জেলা নেতৃত্ব সকলেই তাতে উপস্থিত থাকবেন।
যদিও পুরমন্ত্রীর রাজনৈতিক বৈঠককে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বিজেপি জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, মানুষ তৃণমূলের ধাপ্পাবাজি ধরে নিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে বহু হেঁটেছিলেন। কোনও কাজ হয়েছে? ফিরহাদ হাকিম কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার বৈঠক করলে কোনও ফল পাবে না তৃণমূল।