গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সৌম্যশঙ্কর মাসতিনেক আগে সিউড়িতে এসপি অফিসের সামনেই পুলিসের চেকিংয়ের মুখে পড়েন। সেই সময় হেলমেট না থাকায় পুলিস তাঁকে জরিমানা করে। ওই ঘটনার এক সপ্তাহ পর ফের হেলমেট না থাকার জন্য সৌম্যকে পুলিসের কাছে জরিমানা দিতে হয়। পুলিসের তরফে ওই যুবককে সচেতন করা হয়। পরে ওই রাতে সিউড়ি থানা ও ট্রাফিক পুলিসের আধিকারিকরা বড়বাগানে ম্যারেজ হলে আয়োজিত প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে হাজির হন।
জানা গিয়েছে, রাত তখন পৌনে ৯টা। বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতরা অনেকেই রয়েছেন। কনেযাত্রীরাও ছিলেন। সেইসময় সিউড়ির ট্রাফিক ওসি সুমন প্রামাণিক, থানার অমিত সিনহা, জগন্নাথ ঘোষ প্রমুখ আধিকারিকরা পুলিসের পোশাকেই হঠাৎই পৌঁছে যান। বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে পুলিস ঢোকায় প্রথমে অনেকেই হকচকিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর প্রথাগতভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় ও উপহার দেওয়ার পর সবাই বিষয়টি বুঝতে পারেন। পুলিসের হেলমেট উপহারে অতিথিরাও বলতে থাকেন, এ এক অদ্ভূত বিয়েবাড়ি দেখলাম।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সৌম্যশঙ্করবাবুর সিউড়ি শহরেই ব্যবসা রয়েছে। বছর ২৯-এর ওই যুবকের সঙ্গে হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা সায়ন্তীর গত ১৫আগস্ট বিয়ে হয়েছে। শনিবার ছিল তারই প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান। সৌম্য বলেন, কাজের খুব ব্যস্ততার জন্য মাসতিনেক আগে হেলমেট ছাড়াই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। তারপর পুলিসের চেকিংয়ে পড়ে জরিমানা দিতে হয়েছিল। পরে অবশ্য হেলমেটের গুরুত্ব বুঝেছি। তাই এখন থেকে হেলমেট ছাড়া বাইক নিয়ে বাইরে যাই না। পুলিসের তরফে ওই রাতে বিয়ের অনুষ্ঠানে হেলমেট দেওয়ায় আমরা খুব খুশি। পুলিসের অনুমতি নিয়ে মেনুকার্ডেও সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের প্রচার করেছি। তিনি আরও বলেন, বাইক চালানোর সময় হেলমেট পরা যেমন অপরিহার্য তেমনি মোবাইল ব্যবহারও ঠিক নয়।
প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে হেলমেট পেয়ে খুশি সৌম্যর স্ত্রী সায়ন্তীও। তিনি বলেন, নতুন রকমের উপহার পেয়ে ভালো লাগছে। পুলিসের তরফে হেলমেট দেওয়ার ঘটনা বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে প্রত্যেকেই দেখেছে। ফলে, অনেকের সচেতনতা বৃদ্ধি হবে বলে আশা করছি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচি নিয়ে আগে সিউড়ি থানার তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় হেলমেট ছাড়া বাইক আরোহীদের দেখা গেলেই গোলাপ ফুল দেওয়ার পাশাপাশি হাতে রাখী বেঁধে, চকোলেট দিয়ে সচেতন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও হেলমেট পরায় মানুষ অভ্যস্ত হতে পারেনি। যদিও পুলিসের দাবি, হেলমেট পরার ফলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা কমেছে। তাই মানুষের প্রাণ বাঁচাতেই হেলমেট পরার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।