রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
অন্যদিকে, ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ওই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁরাও ঘটনার সঠিক তদন্তের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি তুলছেন।
বাঁকুড়ার পুলিস সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ওই ছাত্রের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আমরা হাতে পেয়েছি। এছাড়াও কিছু সূত্র আমাদের কাছে এসেছে। সেগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩জুলাই ওন্দার রতনপুরের বাসিন্দা তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র রূপম পাল অন্যান্য দিনের মতোই পুয়াবাগানের বিদ্যালয়ে আসে। পরিবারের অভিযোগ, টিফিনের সময় বিদ্যালয়ের মাঠে খেলা করছিল রূপম। সেই সময় ক্যারাটে জানা তারই এক সহপাঠী রূপমকে মারধর করে। তারপর সে অস্বস্তি অনুভব করায়, ক্লাসে গিয়ে বেঞ্চের উপর মাথা ঝুঁকিয়ে বসে ছিল। ওই সময় ক্লাস নিতে আসা শিক্ষিকা তাকে মারধর করে। তারপরেই রূপম অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিকেলে তাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকজনদের খবর দেয়। ভর্তির সময় থেকেই রূপম আইসিসিইউতে ছিল। ন’দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর অবশেষে তার মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যুর পর রূপমের বাবা চক্রধর পাল বাঁকুড়া থানায় তার এক সহপাঠী, এক শিক্ষিকা ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
অন্যদিকে, ওই বিদ্যালয়ের অন্যান্য অভিভাবকরাও তাঁদের ছেলেমেয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রিন্সিপ্যাল এবং জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানান। অভিভাবকদের অভিযোগ পাওয়ার পর জেলাশাসক রূপমের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিসের পাশাপাশি মহকুমা শাসক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেন। তদন্তে নেমে পুলিস ঘটনার দিনে বিদ্যালয়ের ৬টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ও অন্যান্য শিক্ষক এবং ছাত্রদের সঙ্গেও কথা বলে।
সূত্রের খবর, রূপমের ক্লাসরুমে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে তাকে মারধরের কোনও ঘটনা ধরা পড়েনি। তাই স্বাভাবিকভাবেই রূপমকে কোথায় কে বা কারা মাথায় মারধর করল তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে।
চক্রধরবাবু বলেন, আমরা রূপমের সহপাঠী ও বিদ্যালয়ের কর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানতে পেরেছিলাম, ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। কিন্তু, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা এতদিন কোনও ভাবেই স্বীকার করেনি। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরোক্ষে আমাদের দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে। তাই আমরা চাই, রূপম বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর কে কখন তার মাথায় আঘাত করল পুলিস তা তদন্ত করে দেখুক। পাশাপাশি দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক। শুধু তাই নয়, আমার ছেলের বা আমাদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে ভবিষ্যতে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাদের এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিক।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার পতি বলেন, ক্লাসরুমে মারধর করা হয়নি। সিসিটিভির ফুটেজ আমরা দেখছি। আমরাও চাই, পুলিস সঠিক তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটন করুক।