বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কৃষি দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পাট ডুবিয়ে রাখার জন্য খালে পর্যাপ্ত জল থাকা দরকার। কিন্তু এবার নবগ্রাম, ডোমকল, বহরমপুরসহ বিভিন্ন ব্লকের খালগুলিতে জল ভর্তি হয়নি। অন্যান্য বছর পাট কাটার পর সেই জমিতে কৃষকরা ধান চাষও করেন। কিন্তু এবার ধান চাষ তো দূর, আদৌ পাট উৎপাদন করা যাবে কিনা তা নিয়েই চাষিরা ধন্দে রয়েছেন। ডোমকলের পাট চাষি শেখ উমাদুল বলেন, সরকার ক্ষতিপূরণ না দিলে আমাদের দিন চলবে না। যে কোনও জলে পাট জাঁক দেওয়া যায় না। ভালো রং না হলে দাম পাওয়া যায় না। অনেকে যেখানে সেখানে পাট জাঁক দিচ্ছেন ঠিকই কিন্তু রং ঠিক আসছে না। তাঁদেরকে কম দামে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে। পাটের দামও এখনও ভালো নেই। এবার অধিকাংশ কৃষক পাট চাষ করে লাভ করতে পারবেন না। আরেক পাট চাষি সনাতন দাস বলেন, আর্থিক অবস্থা ভালো থাকা অনেকে সাবমার্সিবল থেকে জল তুলে খালে ভরছেন। মাঠ থেকে ট্রাক্টরে পাট নিয়ে আসার পর তা সেচের জলে জাঁক দিলে লাভ তো থাকবেই না, উল্টে বিঘা পিছু এক থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান হবে। প্রথম দিকে যাঁরা পাট কেটে জাঁক দিতে পেরেছেন তাঁরাই কিছুটা লাভ পেয়েছেন। কিন্তু পরের দিকে যাঁরা পাট কেটেছেন তাঁদের লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নবগ্রামের এক চাষি বলেন, জমিতে আর কয়েক দিন পাট থাকলে শুকিয়ে যাবে। তাই এবার হয়তো গাছ কেটে ফেলে দিতে হবে। এছাড়া কোনও উপায় নেই। কয়েক দিনের মধ্যে টানা চার পাঁচ দিন ধরে ভারী বৃষ্টি না হলে আর পাট বাঁচানো যাবে না। সারাবছর সংসার চালানো অনেকের কাছে দায় হয়ে উঠবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে পাট চাষের এলাকাও কমে যাবে।
প্রসঙ্গত, জেলার কান্দি মহকুমা সহ অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টি কম হলেও ধান রোপণ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। মূলত সাব মার্সিবলের জলে ধান রোপণ করা গিয়েছে। তাই আপাতত ধান চাষিরা স্বস্তি পেলেও পাট চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছে। গতবছরও শিলাবৃষ্টির জন্য নওদাসহ জেলার মোট ৬টি ব্লকে পাট চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এবার বৃষ্টির অভাবে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি জেলায় অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর মুর্শিদাবাদে জলের অভাবে পাট জমিতে শুকোতে শুরু করেছে। এই জেলার বাসিন্দারা বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করছেন। অনেক গ্রামে প্রার্থনাও শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও এই জেলার প্রতি প্রকৃতি উদারতা না দেখানোয় চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না চাষিরা।