বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এব্যাপারে জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, গত আর্থিক বর্ষে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে জেলায় ভালো কাজ হয়েছে বলেই এবার বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। যেসব উপভোক্তার নামে বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে, তাঁদের অবস্থা খতিয়ে দেখে বাড়ি নির্মাণের টাকা অনুমোদনের জন্য বলা হয়েছে। প্রকৃত মানুষই যেন বাড়ি পায় সেই বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বর্ষে জেলায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে ৬৯ হাজার ৭০৭টি বাড়ি নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই কাজ চলতি মরশুমে প্রায় ৯৫শতাংশ হয়ে গিয়েছে। তারমধ্যে এবার ২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষে ৮৩হাজার ৩৫৬টি বাড়ির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ তহবিলের বরাদ্দে এই যোজনা রূপায়ণ হয়। সম্প্রতি বীরভূমের জেলাশাসক বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণ সংক্রান্ত একগুচ্ছ নির্দেশিকা প্রতি ব্লকে পাঠিয়েছেন।
জেলাশাসক বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর জেলায় নতুন গৃহনির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। গত বছরের তুলনায় এবার আমাদের অনুমোদনের পরিমাণ বেড়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার গৃহনির্মাণ প্রকল্পে কড়া নিয়ম আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, আগে গৃহ নির্মাণের জন্য টাকা পাওয়ার এক বছরের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করতে হতো। এতে উপভোক্তারা বাড়ি নির্মাণের টাকা অন্য খাতে খরচ করে দেন বলে প্রকল্পের কাজ থমকে থাকে বলে অভিযোগ। তাই এবার থেকে গৃহনির্মাণের কাজে কোনওরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রত্যেক উপভোক্তার আবাস যোজনায় প্রথম কিস্তির টাকা ঢোকার ১০০ দিনের মধ্যে বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে যে পরিবারে মহিলা কর্ত্রী রয়েছেন, তাঁকে বরাদ্দ দেওয়ায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট অনুযায়ী যার নাম যে জায়গায় রয়েছে, তাঁরাই গৃহ নির্মাণের সুবিধা পাবেন। কাউকে আগে টাকা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া তালিকায় পরে নাম থাকা কাউকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। এমনকী, জনসাধারণকে জানানোর জন্য বিডিও অফিসে ও পঞ্চায়েত কার্যালয়ে পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ করতে হবে। সেই তালিকা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের কাছে তা জানানো যাবে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যেসব উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদের তড়িঘড়ি অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ প্রশাসনকে করতে হবে। এমনকী, যদি কোনও অ্যাকাউন্ট নিয়ে সন্দেহ হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে উপভোক্তার নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর যাচাই করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে প্রত্যেক ব্লকেই একটি সচেতনতা শিবির করার কথাও বলা হয়েছে। সেখানে সমস্ত উপভোক্তার গৃহ নির্মাণের প্রকল্পের শংসাপত্র দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থাপূর্ণ উপভোক্তাকেও বাংলার আবাস যোজনায় গৃহ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সেব্যাপারে সরব হয়েছে। এবারও যাতে সেইরকম ঘটনা না ঘটে তার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী বীরভূমে ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৩১৪টি বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলায় ২০১৮-’১৯ আর্থিক বর্ষ পর্যন্ত এক লক্ষ ৩৬ হাজার ৩১টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। জেলায় চলতি আর্থিক বর্ষের জন্য আরও ৮৩ হাজার ৩৫৬টি বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।