পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
১৫আগস্ট মধ্যরাতে তমলুক রাজ ময়দানে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়। ওই দিন ঘড়ির কাঁটায় ঠিক রাত ১২টায় পতাকা তুলে বীর শহিদদের সম্মান জানান তমলুকের সংসদ সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারী। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনভর জেলার সর্বত্র সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস ও রাখী বন্ধনের নানা বর্ণময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে প্রথমে তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধে শহিদ ও প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূর্তিতে মালা দেন শুভেন্দুবাবু। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানান। সেখানে প্রবীণ নাগরিকদের হাতে রাখী পরিয়ে তাঁদের মিষ্টিমুখ করান। অনেক খুদেরাও এসে সেখানে মন্ত্রীকে রাখী পরায়। তমলুকের পর মন্ত্রী হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দুর্গাচকে তৃণমূলের সতীশ সামন্ত ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর স্বাধীনতা দিবসের পদযাত্রায় যোগ দেন।
বর্ণাঢ্য পদযাত্রায় হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে তিনি হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে হাঁটেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হলদিয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার আদক, ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশুশেখর মণ্ডল সহ পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলার ও তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। পদযাত্রা শেষে মন্ত্রী হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে রোগীদের ফল বিতরণ করেন। রাখী বন্ধন উপলক্ষে দিদি ও বোনেদের হাতে রাখী পরে মন্ত্রী ‘রিটার্ন গিফট’ হিসেবে তাঁদের হাতে চারাগাছ তুলে দেন। এরপর মন্ত্রী ১৪নম্বর ওয়ার্ডে আরও একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মেধাবী পড়ুয়াদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
শিল্প শহরে স্বাধীনতা দিবসে সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান উদযাপন হয় হলদিয়া আইওসি রিফাইনারির উদ্যোগে। সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ব্রিজ বেহারি ঘোষণা করেন, ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে আইওসি ২৫কোটি টাকা ব্যয় করবে।
কাঁথি ও এগরাতেও মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। ভূপতিনগরের পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস ও রাখীবন্ধন উৎসব পালন করা হয়। আশ্রমের আবাসিকদের নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এলাকা পরিক্রমা করে। কাঁথির দুরমুঠের দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। এছাড়া দুই মহকুমায় প্রতিটি থানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস ও একইসঙ্গে রাখীবন্ধন উৎসব পালন হয়েছে। কাঁথির মহিষাগোটে ওই দিন নবনির্মিত শহিদস্তম্ভের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য শিশির অধিকারী।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। মূল অনুষ্ঠানটি হয় জেলা কালেক্টরেটে। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। তিনি অভিবাদন গ্রহণ করেন। পুলিস সুপার দীনেশ কুমার সহ অন্যান্য পুলিস ও প্রশাসনিক আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাবের উদ্যোগেও স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন রাতে জেলার বহু জায়গায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মেদিনীপুর শহরের বটতলাচক সহ বিভিন্ন জায়গায় ওই দিন রাতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
ঘাটালে নিজের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা তোলেন মহকুমা শাসক অসীম পাল। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়। ঘাটাল ব্লকের নারায়ণপুর উত্তরপাড়া মিলন সঙ্ঘ ক্লাব ওই দিন প্রায় ৩২৫ফুট লম্বা ও ১৯ ফুট চওড়া একটি জাতীয় পতাকা কয়েকটি মালবাহী গাড়ির উপর চড়িয়ে ঘাটাল মহকুমার ৫০ কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করে। এছাড়াও ক্ষীরপাই শহরে ১০০ ফুটের একটি জাতীয় পতাকা নিয়ে শহর পরিক্রমা করা হয়। তবে শিলাবতী নদীতে পর্যাপ্ত জল না থাকার কারণে এবার ঘাটাল পুরসভার উদ্যোগে পাঁচ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়নি।
ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়েও সাড়ম্বরে স্বাধীনতা দিবস ও রাখীবন্ধন পালিত হয়। জেলার গোপীবল্লভপুরে রাত ১২টা নাগাদ মন্দির রোড এলাকায় যুবকরা মশাল হাতে নিয়ে শঙ্খ বাজায়। পুরো বাজার তারা পরিক্রমা করে। ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করেন জেলাশাসক আয়েষা রানি এ। উপস্থিত ছিলেন জেলা আধিকারিক সহ স্কুলের পড়ুয়ারা। পরে জেলাশাসকের সভাকক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়।
ওই দিন ১০০ ফুটের জাতীয় পতাকা মাথায় নিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা করেন কেশবডিহি ক্লাবের সদস্যরা। জামবনী ব্লকের চিল্কিগড় হাসপাতালে গিধনী স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষ থেকে রোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফল ও মিষ্টি। শহরের পাঁচমাথা মোড়ে পুরসভা ও ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিসের উদ্যোগে রাখীবন্ধন পালিত হয়।