কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
গোঘাট থানার নকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের কোটা এলাকায় যৌথ পরিবারে বসবাস করেন পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সঞ্জীববাবু। এর আগে তিনি দলের বুথ সভাপতি ছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে তিনি জয়লাভ করেন। পরে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পঞ্চায়েতের প্রধান হন সঞ্জীববাবু। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ওইদিন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা নাগাদ পরপর দু’টি বোমা আমাদের বাড়ির প্রধান দরজা লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়। বোমার শব্দে মাটির কাঁচা বাড়ি কেঁপে ওঠে। সেই সময় বাইরে আসতেই দেখি, গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। সঙ্গে পোড়া বারুদের গন্ধ। আতঙ্কে আমার বৃদ্ধ বাবা ঘরের বাইরে আসতে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। পরে পুলিস আসে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন। আমি নিশ্চিত, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এলাকার মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমার ও আমার পরিবারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই বিজেপি এলাকায় সন্ত্রাস চালানোর জন্য আমার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে।
নকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১০টি বুথ ও ১১টি গ্রাম সংসদ রয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীশূন্য ভাবে শাসক দল নির্বাচনে জয়লাভের পর পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করে। তবে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে কেবল মাত্র দু’টি বুথে তৃণমূল নিজেদের জয় ধরে রাখতে পেরেছে। বাকি আটটি বুথে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এরপর থেকেই এলাকাজুড়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়তে থাকে। প্রসঙ্গত, গত ২২জুলাই রাতে গ্রামপঞ্চায়েত দড়ি নকুণ্ডা এলাকায় পিটিয়ে খুন করা হয় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী লালচাঁদ বাগকে। সেই ঘটনায় বিজেপি আশ্রিত ২২জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করে মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবার।
অন্যদিকে, গত ২৮জুলাই নকুণ্ডার কোটা এলাকায় একটি খাল থেকে উদ্ধার হয় বিজেপি কর্মী কাশীনাথ ঘোষের মৃত দেহ। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, কাশীনাথকে শাসক দলের দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে খুন করে ওই খালের জলে ফেলে দিয়েছে। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জলে ডুবে মৃত্যুর প্রমাণ পেয়েছে পুলিস। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে তৃণমূল বিজেপি দুই কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের রবিবার রাতে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
গোঘাটের বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার বলেন, প্রথমে আমাদের সক্রিয় কর্মীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুন করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ওইদিন আবারও আমাদের দলে নেতা তথা পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়িতে বোমাবাজি করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। আগে যারা সিপিএমের হার্মাদ ছিল, তারাই এখন বিজেপিতে যোগ দিয়ে এলাকায় এভাবে সন্ত্রাস চালিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। সাংগঠনিকভাবে আমাদের দমিয়ে রাখতে চাইছে।
যদিও আরামবাগ জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সহ সভাপতি চিন্ময় মল্লিক বলেন, বোমাবাজির ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও কর্মী বা সমর্থক যুক্ত থাকতে পারে বলে আমার মনে হয় না। তৃণমূলের পক্ষ থেকে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।