পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এদিকে, ওই রাতে লালচাঁদের মৃত্যুর পর শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে নকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের দড়িনকুণ্ডা এলাকা। রাতে একাধিক পুলিস গাড়ির আনাগোনা ও চাপা উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে ভোরের আলো ফোটে এলাকায়। এলাকায় যাতে কোনওরকম অশান্তি না ছড়ায় তারজন্য রাতভর মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিসবাহিনী। এদিকে মঙ্গলবার অধিকাংশ গৃহস্থে রান্নার হাঁড়িও চাপেনি। স্থানীয় দড়িনকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি হাতেগোনা ছিল। বিদ্যালয়ে মিডডে মিলে রান্না করতে আসেননি রাঁধুনি। তাই বাধ্য হয়ে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে স্কুল ছুটি দিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক শুভাশিস ঘোষ। তিনি বলেন, খুনের ঘটনায় এলাকা থমথমে রয়েছে। তাই অধিকাংশ পড়ুয়া এদিন স্কুলে আসেনি। রাঁধুনি না আসায় স্কুলের মিডডে মিল রান্না হয়নি। মাত্র ২০জন ছাত্রছাত্রী স্কুলে রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আগেই ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
পরিবারের সেজ ছেলে ছিলেন লালচাঁদবাবু। বর্তমানে একই বাড়িতে আরও তিন ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। এছাড়াও পরিবারে বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। নিজে সেভাবে পড়াশোনা না করলেও দুই মেয়ে স্বপ্না ও মেঘনাকে উচ্চ শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
লালচাঁদবাবুর বড় মেয়ে স্বপ্না বর্তমানে স্থানীয় নকুণ্ডা গার্লস জুনিয়র হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর স্কুলে যাতায়াতের অসুবিধার জন্য বাবা তাকে সাইকেল কিনে দিয়েছিল। বাবার মৃত্যুর পর কান্নায় ভেঙে পড়ে সেকথাই বলে স্বপ্না। বোন বাবার খুবই আদরের ছিল। প্রতিদিন রাতে বোনের জন্য চকোলেট ও বিস্কুট নিয়ে আসতে ভুলত না।
এদিকে, এদিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মৃত তৃণমূল কর্মী লালচাঁদবাবুর দেহ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে নিয়ে আসেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে রাখা হয় তাঁর দেহ। কলকাতার সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার কারণেই লালচাঁদকে খুন করা হল বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করে। এদিন সকাল থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি বেচারাম মান্না, গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্ব আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। এরপর তাঁরা সমবেদনা জানাতে হাজির হন মৃতের বাড়িতে। দলের জেলা সভাপতি দিলীপবাবুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন লালচাঁদবাবুর বৃদ্ধ বাবা অজিত বাগ। এদিন সন্ধ্যায় বাড়িতে মৃত তৃণমূল কর্মীর দেহ নিয়ে আসার পর তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় জমান এলাকার বাসিন্দারা। এরপর দড়িনকুণ্ডা শ্মশানে লালচাঁদবাবুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
দিলীপবাবু বলেন, যেভাবে শহিদ হওয়া তৃণমূল কর্মীদের পাশে দল আছে। সেভাবেই এই পরিবারের পাশে আমরা থাকব। পাশাপাশি লালচাঁদের খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দোষীদের কোনওভাবেই ছাড়া হবে না। আইন অনুযায়ী দোষীদের সাজা হবেই।