বিএনএ, বর্ধমান: ২০১৯-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমএ’তে ভর্তির জন্য ৬০ শতাংশ ক্যাটাগরিতে প্রভিশনাল মেধা তালিকা প্রকাশ করেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই তালিকায় ছাত্রছাত্রীদের নামের পাশে সবার মোবাইল নম্বর প্রকাশ করায় তুমুল বির্তক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে এই ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ বেশিরভাগ ছাত্রী। তাঁদের অভিযোগ, প্রত্যেকের মোবাইল নম্বর অত্যন্ত ব্যক্তিগত। মেধা তালিকায় সেই নম্বর কী কারণে প্রকাশ করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ? এবার যদি ওই মোবাইল নম্বরে কেউ ফোন করে লাগাতার বিরক্ত করে, উত্ত্যক্ত করে তখন তার দায় কে নেবে? এখানেই বিতর্ক শেষ নয়। ওই মেধা তালিকায় সংস্কৃত বিষয়ে এক ছাত্রীর নাম লেখা হয়েছে—‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’! এই ঘটনা সামনে আসতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও চরম অস্বস্তিতে পড়েছে।
সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৯-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমএ’তে ভর্তির জন্য ৬০ শতাংশ ক্যাটাগরিতে প্রভিশনাল মেধা তালিকা প্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ওই তালিকা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীরা ওই তালিকা দেখে অবাক হয়ে যান। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের নাম, লিঙ্গ, সংরক্ষণ ক্যাটাগরি, বিষয় এবং মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতকে প্রাপ্ত নম্বরের শতাংশ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর নামের পাশে তাঁদের মোবাইল নম্বর প্রকাশ করাতেই বিতর্ক ছড়িয়েছে। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর কী করে ওয়েবসাইটের মতো জায়গায় প্রকাশ করা হল তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন একাধিক ছাত্রছাত্রী। বহু ছাত্রীর অভিভাবকও এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ক্ষুব্ধ। তাঁদের কথায়, এখনকার দিনকাল কেমন তা কারও অজানা নয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কার অনুমতি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল নম্বর প্রকাশ করল? এতে ছাত্রীদের যদি হয়রানির শিকার হতে হয় তাহলে তার দায় বিশ্ববিদ্যালয়কেই নিতে হবে।
ছাত্রছাত্রীরা বলেন, মেধা তালিকায় মোবাইল নম্বরের প্রয়োজনীয়তা কী? অকারণে দেওয়া হয়েছে। কারণ, মোবাইল নম্বর তো মেধার সঙ্গে যুক্ত নয়। বিষয়ের সঙ্গেও যুক্ত নয়। সবার নম্বরগুলি এভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়াটা একেবারেই তুঘলকি কাজ। ভবিষ্যতে এর ফল কী হতে পারে সেটা ভেবে মোবাইল নম্বর দেওয়া উচিৎ ছিল। অন্যদিকে, মেধা তালিকায় সংস্কৃত বিষয়ের ২৬ নম্বরে দেখা গিয়েছে, ‘স্টুডেন্ট’-এর জায়গায় একজনের নাম লেখা রয়েছে—‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’। ‘জেন্ডারে’র জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘ফিমেল’। ওই ওয়েস্ট বেঙ্গলের পাশেও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে! ছাত্রছাত্রীদের কথায়, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামটা ভুলবশত হয়েছে বলে দেখে বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু, এটা মারাত্মক ভুল। তার কারণ, ওয়েস্ট বেঙ্গল কখনও কারও নাম হয় না। কারও নামের বানান ভুল হতে পারে, পদবি ভুল হতে পারে। কিন্তু, একেবারে বাস্তবের বাইরে বেরিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল নাম লেখা হল কীভাবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এতবড় ভুল হয় কী করে?
সবার মোবাইল নম্বর প্রকাশ করার ব্যাপারে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাইনি। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এখনও ওই প্রভিশনাল লিস্ট দেখিনি। তাই না দেখে আমি কোনও মন্তব্য করব না।