কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় বছর আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় ময়না ও লক্ষ্মীর। বর্তমানে ওই দম্পতির তিন বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছরের একটি ছেলে রয়েছে। লক্ষ্মী তামিলনাড়ুতে স্বর্ণশিল্পী হিসেবে কাজ করতেন। তবে বিয়ের আগে থেকেই ময়নার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার বাপেরবাড়ি আরামবাগ থানার গৌরহাটি এলাকার বাসিন্দা ঝন্টু দোলুইয়ের। বিয়ের পরেও তাদের সেই সম্পর্কে ছেদ পড়েনি।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন ২০আগে ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ময়না। তারপর সে প্রেমিক ঝন্টুর সঙ্গে থাকবে বলে চলে যায় হায়দরাবাদে। সেখানে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম মেরামতের কাজ করত ঝন্টু। সেই খবর পেয়ে তামিলনাড়ু থেকে বাড়ি ফেরেন লক্ষ্মী। এদিকে, গত বুধবার ময়নাও ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফেরে। সে সম্পর্ক বিচ্ছেদের জন্য স্বামীর কাছে দাবি জানাতে থাকে।
পুলিস জানিয়েছে, রবিবার রাতে মদ্যপানের আসর বসেছিল লক্ষ্মীর ঘরে। লক্ষ্মীর বন্ধুদের সঙ্গে আগেই ষড়যন্ত্র করে রেখেছিল ময়না। সেইমতো লক্ষ্মীকে অতিরিক্ত মদ্যপান করানো হয়। তারপর হাত পা বেঁধে খাটের নীচে ঢুকিয়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় সেখানে ঝন্টুও উপস্থিত ছিল বলে জানা গিয়েছে। পরে সে পালিয়ে যায়। এদিন লক্ষ্মীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনায় সময় বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীবাবুর বৃদ্ধা মা রেবতী প্রমাণিক ও মেজ বউদি কাকলি প্রামাণিক। রাত প্রায় ২টো নাগাদ ময়না প্রথমে তার জা কাকলিদেবীকে ডাকে। তার আগে অবশ্য ঝন্টু পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে মৃতের বউদি কাকলিদেবী বলেন, আমি যে ঘরে ছিলাম তার পাশের একটি ঘরে ওরা থাকত। ঘরের বাইরে বের হতেই দেখি, পোড়া গন্ধ। ভিতরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। এরপর প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করাতে তাঁরা এসে ঘরের আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। পরে দেখতে পাই, লক্ষ্মী হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছে। পুলিস এসে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় লক্ষ্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই ওর মৃত্যু হয়।
তদন্তে নেমে পুলিস আধিকারিকরা জানতে পেরেছে, পরিকল্পনামাফিক লক্ষ্মীকে খুন করা হয়। লক্ষ্মীকে পুড়িয়ে মারা হয়। তার পাশের বারান্দায় থাকতেন লক্ষ্মীর বৃদ্ধা মা। রাতে শাশুড়ি যাতে কোনওরকম ভাবে কিছু টের না পায় তার জন্য ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছিল রেবতীদেবীকে। এব্যাপারে তিনি বলেন, রবিবার রাত তখন সাড়ে ১০টা বাজে। ছোট বউ আমাকে কাচের গ্লাসে করে ঠান্ডা পানীয় দিয়ে যায়। আমি খেতে না চাইলেও শেষমেশ বউমার অনুরোধে তা খেতে বাধ্য হই। গভীর রাতে পোড়া গন্ধ নাকে এসেছিল। কিন্তু, বিছানা ছেড়ে ওঠার উপায় ছিল না। ছেলের বিয়ের পর তিনবার বউমা অন্য ছেলেদের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। পরে বিষয়টি ছেলে ও বউমা নিজেদের মধ্যে কথা বলে মিটিয়ে নেয়। তবে বউমা ছেলেকে খুন করবে ভাবতেও পারছি না।