কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
ব্যাঙ্ককর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করে এটিএম তথ্য হাতিয়ে এখন প্রতিনিয়ত প্রতারণা চলছে। পাশাপাশি অনেক সময় চিপ কিংবা গোপন ক্যামেরায় এটিএম কার্ডের তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে। অধ্যাপক থেকে চিকিৎসক, শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষ কেউই এটিএম প্রতারকদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। বড় বড় শপিংমলে কেনাকাটার পর অনলাইনে পেমেন্ট করার সময় নিজেকেই কার্ড সোয়াইপ করার পরামর্শ দিচ্ছেন পুলিস কর্মীরা। কারণ, ক্যাশ কাউন্টারে থাকা শপিংমলের কর্মী ইচ্ছে করলেই কোমরে বেল্টের মধ্যে গোপনে চিপ রেখে এটিএম কার্ড ছুঁইয়ে যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারেন। সেই তথ্য সাইবার অপরাধীদের দিলে মুহূর্তে অ্যাকাউন্ট সাফ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তমলুক সাইবার থানার এসআই সমীর সানবিঘ্ন বলেন, এটিএম কার্ড ব্লক হয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে অনেক সময় সাইবার অপরাধীরা গ্রাহককে ফোন করে কার্ড নম্বর, মেয়াদ ইত্যাদি তথ্য হাতিয়ে নেয়। তারপর মোবাইলে ওটিপি মেসেজ আসে। সেই নম্বরটিও জেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়। প্রতারণার খপ্পরে পড়েছে বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মানুষজন আমাদের কাছে আসেন। এছাড়াও এটিএম ক্লোন করে টাকা তুলে নেওয়া হয়। এনিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রচার করছি। তারপরও এধরনের অপরাধ ঘটে চলছে।
মহিষাদলের ভোলসারা গ্রামের বিদেশরঞ্জন বেতাল এটিএম প্রতারণা চক্রের খপ্পরে পড়ে ১২হাজার টাকা খোয়ান। তমলুক সাইবার থানার তৎপরতায় সেই টাকা তিনি ফেরত পেয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাইবার থানাকে নিজের হাতে চিঠি লিখেছেন বিদেশরঞ্জনবাবু। একইভাবে পাঁশকুড়ার প্রদীপকুমার দাস এটিএম জালিয়াতির শিকার হয়ে ৪৭হাজার ৮৮৮টাকা খোয়ান। সাইবার শাখায় অভিযোগ করার পর তিনি ৩৯হাজার ৭৫৫টাকা ফেরত পেয়েছেন। এটিএম প্রতারণার শিকার মানিক প্রধান হোয়টস অ্যাপে অভিযোগ করেছেন। তিনি ৫০হাজার টাকা খুইয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনিও টাকা ফেরত পেয়েছেন।
গত জানুয়ারি মাস থেকে সাইবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়ে খোয়া যাওয়া ৯লক্ষ ৪৬হাজার ৩৭টাকা এপর্যন্ত প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে ফেরত দিতে পেরেছে সাইবার থানা। মোট ৪৬টি অভিযোগ এসেছে। অনেকের দাবি, এটিএম তথ্য না দেওয়া সত্ত্বেও অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিচ্ছে অপরাধীরা। এক্ষেত্রে পুলিসের বক্তব্য, নিরাপত্তারক্ষী আছেন এবং সিসি ক্যামেরা আছে, এমন এটিএম ব্যবহার করা উচিত। সাইবার অপরাধীরা এটিএমের চিপ রেখে তথ্য হাতিয়ে নিতে ওস্তাদ। তাছাড়া এরকম ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব অভিযোগ জানানো জরুরি। কারণ, তাতে টাকা ফেরানোর সম্ভাবনা থাকে। কেননা অপরাধীরা একটা অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করার পর আরও একাধিক অ্যাকাউন্টে তা সরিয়ে ফেলে। ওই সব অ্যাকাউন্ট নকল। সেখান থেকে টাকা ফেরানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্যয় ব্যাপার। ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া শহর থেকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধীরা এই কারবার চালায়। অপরাধচক্রটি ভিন রাজ্যের হওয়ায় কিছু সমস্যা থাকে।
পুলিস সুপার ভি সোলেমান নেশাকুমার বলেন, জেলায় বেশকিছু এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষী এবং সিসি ক্যামেরা নেই। আমরা ওই সব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে বলেছি, ব্যাঙ্ক এবং এটিএম কাউন্টারে সিসি ক্যামেরা বসাতে। এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষীও রাখতে হবে।