পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি।প্রতিকার: আজ দই খেয়ে শুভ ... বিশদ
এবিষয়ে কাটোয়ার মহকুমা পুলিস আধিকারিক ত্রিদিব সরকার বলেন, তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় আর কেউ যুক্ত ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া-১ ব্লকের সুদপুর পঞ্চায়েতের বিজয়নগর গ্রামে বুধবার গভীর রাতে খুন করা হয় সুজিত মণ্ডলকে। তাঁকে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় স্ত্রী শম্পা মণ্ডল। পরে প্রেমিক নয়ন পালকে ফোন করে ডেকে দু’জনে মিলে মুখে বালিশ চাপ দিয়ে সুজিতকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। শম্পা মণ্ডলের সঙ্গে নয়নের দেড়বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে। নয়ন সুজিতবাবুর ছেলে ও মেয়ের গৃহশিক্ষক বিজয়নগর গ্রামের যুবক নয়ন। অবৈধ সম্পর্কের ‘পথের কাঁটা’ দূর করতে সুজিতকে খুন করা হয়। কাটোয়া থানায় এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন মৃতের বাবা জ্যোতিষ মণ্ডল। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিস মৃতের ছেলেকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শম্পা প্রতিবেশীদের ডেকে তার স্বামী হৃদরোগে মারা গিয়েছে বলে রটিয়ে দেয়। সবাই তার রটানো গল্পকে সত্যি ধরে নিয়ে মৃতদেহ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে ময়নাতদন্তের জন্য। কিন্তু, বিকেলে মৃতের ৯ বছরের মেয়ে খুনের ঘটনার কথা পরিবারের সদস্যদের খুলে বললে সকলেই স্তম্ভিত হয়ে যান। মৃতের মেয়ে সুদীপ্তা মণ্ডল সবাইকে বলে, রাতে মা আমাদেরও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রেখেছিল। কিন্তু, ঘোর কেটে যাওয়ার পর আমরা দেখি, মা ও স্যার বাবাকে বালিশ চাপা দিয়ে মারছে। আমাকে মা মেরে ফেলার ভয় দেখিয়েছিল। তাই আমি ভয়ে চুপ করেছিলাম।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ বছর আগে মঙ্গলকোটের শ্যামবাজার গ্রামের শম্পার সঙ্গে পেশায় মিষ্টির কারিগর সুজিতের বিয়ে হয়েছিল। তাদের ১৪ বছরের ছেলে ও একটি ৯ বছরের মেয়ে রয়েছে। তাদের ছেলে মেয়েকে টিউশনি পড়ানোর সূত্রেই শম্পার সঙ্গে আলাপ হয় নয়নের। প্রায় দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। তাদের সম্পর্কের কথা প্রতিবেশী সহ গ্রামের প্রায় সকলেই জেনে যাওয়ায় দুই পরিবারের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। গ্রামের লোকজনও নয়নকে সংযত থাকার পরামর্শ দেয়।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকমাস আগে গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে নয়নকে শম্পার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। অভিযোগ, তারপরেও সে শম্পার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে, নয়নকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করেছিলেন সুজিতের বাবা জ্যোতিষবাবু। ঠিক হয়, নয়নদের বাড়িতেই সুজিতের ছেলে মেয়ে পড়তে যাবে। তবে তারপরেও তাদের সম্পর্কে যে ছেদ পড়েনি তা প্রতিবেশীদের কথা থেকেই জানতে পারা যায়। প্রতিবেশীরা জানান, তারপরেও নয়নকে তাঁরা শম্পাদের বাড়ি আসতে দেখেছেন।
এদিন মৃতের কাকা তামাল মণ্ডল বলেন, বউমা যে এরকম করবে আমরা ভাবতে পারিনি। এর আগে শম্পার কীর্তিকলাপ তার বাবাকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু, তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি।
সুজিত যে ঘরে থাকত সেই ঘরের পাশেই খিড়কি দরজা আছে। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, সেই দরজা দিয়েই ওইদিন রাতে ঘরে ঢুকেছিল নয়ন। পুলিস সুজিতের ঘর থেকে ঘুমের ওষুধ সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস উদ্ধার করেছে।