কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫জুলাই এইসব বিষয় নিয়ে প্রশাসনের গঠিত কমিটি বৈঠক করে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রশাসন যে সব রকম ভাবে প্রস্তুত তা রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে জানানো হয়েছে। প্রশাসন প্রস্তুত কি না সে ব্যাপারে এর আগে এই দপ্তর থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক পবন কাদিয়ান এ ব্যাপারে সম্মতি দেন। তাঁরা যে প্রস্তুত সেব্যাপারে রাজ্যকে তিনিই জানান।
জানা গিয়েছে, মোট ৮৬টি জায়গা হেরিটেজ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। পাশাপাশি এই সংক্রান্ত অভিযোগ, আপত্তি, পরামর্শ জানানোর জন্য সেলও খোলা হয়েছে। এবার নিয়ম অনুযায়ী এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানানোর জন্য ড্রাফট পাবলিকেশন বার হতে চলেছে।
জেলাশাসক বলেন, এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কিছু দিন আগে একটি বৈঠক হয়েছে। আমরা যে সবরকমভাবে প্রস্তুত, তা ইতিমধ্যেই রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছি। এরপর নিয়ম অনুযায়ীই খুব তাড়াতাড়ি ড্রাফট পাবলিকেশন বের করবে রাজ্য। আমরা জেলশাসকের কার্যালয়, জেলা পরিষদ এবং নবদ্বীপ পুরসভা এই সংক্রান্ত সেলও খুলে দিয়েছি। খুব শীঘ্রই নবদ্বীপ হেরিটেজ সিটি হিসাবে তকমা পেতে চলেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ নবদ্বীপে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে নবদ্বীপকে হেরিটেজ শহর বলে ঘোষণা করে গিয়েছিলেন। তারপরেই এব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারপর এখন প্রশাসন প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, নবদ্বীপ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান। বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, মুসলিম, খ্রিস্টান সর্বধর্মের সমন্বয় ক্ষেত্র নবদ্বীপকে হেরিটেজ শহরের মর্যাদা দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ও নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা হেরিটেজ কমিটি গঠন হওয়ার পর নবদ্বীপ পুর এলাকার ও নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনস্ত এলাকার বিশেষ বিশেষ জায়গাগুলি নথিভুক্ত করে জমা দেন। পরে সেই স্থানের সংখ্যা আরও বাড়ে। এই কাজে সহায়তা করে শিবপুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিটিউ অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
পুরাতত্ত্ববিদেরা মনে করেন, গঙ্গা তটবর্তী এই ভূখণ্ড আদতে বৌদ্ধদের আবিষ্কার। পরবর্তীকালে এটি নবদ্বীপ নামে পরিচিতি লাভ করে। নবদ্বীপের উদ্ভব নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিস্তর মতভেদ আছে। তবে নবদ্বীপের বৌদ্ধদের বিদ্যাচর্চা ও তন্ত্র সাধনা নিয়ে সকলে একমত। নবদ্বীপ শহর লাগোয়া বহু এলাকা রয়েছে যা সমানভাবে ইতিহাসের সাক্ষী ও গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত। শহরের বাইরে অনেক এলাকা পঞ্চায়েত অধীনেও রয়েছে। শহরের পরিকাঠামো আমূল সংস্কারে নিকাশি ব্যবস্থা ও ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎলাইনের কথা বলা হয়েছে। নিকাশি জল নদীতে ফেলার আগে ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে শোধন করতে হবে। নবদ্বীপে চিহ্নিত ৮৬টি স্থানের মধ্যে যেমন বামনপুকুর পঞ্চায়েত এলাকা আছে, তেমনি আছে গঙ্গার পূর্বকূলের প্রাচীন মায়াপুরের বেশ কিছুটা এলাকাও রয়েছে। কারণ, গবেষকদের মতে, চৈতন্য মহাপ্রভুর যুগে মায়াপুর(মিয়াঁপুর চর), স্বরূপগঞ্জ নবদ্বীপের অংশ ছিল। সেইসময় নবদ্বীপের অবস্থান ছিল ভাগীরথীর পূর্ব কূলে।
আইআইইএসটি রিপোর্ট পাওয়ার পর পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, হেরিটেজ কমিটি পর্যালোচনায় বসেছিল। ধাপে ধাপে কাজ হওয়ার পর বর্তমানে হেরিটেজ তকমা পুরোপুরিভাবে পেতে চলেছে নবদ্বীপ। নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, আগেই মুখ্যমন্ত্রী নবদ্বীপকে হেরিটেজ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন, এবার আগামী একমাসের মধ্যেই তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে।