বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আমলাজোড়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় প্রধান ও নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সেলে চিঠি দেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, সরকার নির্ধারিত মূল্যের ৩৩ থেকে ৪০ শতাংশ কম টাকায় কাজের বরাত নিচ্ছে ঠিকাদাররা। যার জেরে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। এমনকী, একই কাজের পুনরায় কোনও টেন্ডার না করেই তা বর্ধিত করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই পঞ্চায়েতের কাজগুলিতে ই-টেন্ডার করা হচ্ছে না। কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রধান স্বজনপোষণ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও নতুন ড্রেন নির্মাণের জায়গায় পুরনো ড্রেন সংস্কার করা হচ্ছে। এমনকী, ড্রেনের দৈর্ঘ্যও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও কোনও এক বিশেষ ঠিকাদারের চিঠির জেরে নির্ধারিত সময়ে টেন্ডার খোলা আটকে গিয়েছিল বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এহেন গুরুতর অভিযোগ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সংক্রান্ত সেল থেকে জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে সাতদিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। জেলাপ্রশাসন ১১ জুলাই সেই নির্দেশ পেয়েই সক্রিয় হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম রায়ের নির্দেশে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক কাঁকসার বিডিওর কাছে বিষয়টি নিয়ে দু’দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেন। ১৬ জুলাই সেই নির্দেশিকা পেয়ে বিডিও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এলাকায় পাঠান। তদন্তকারীদের দেওয়া রিপোর্টে একাধিক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গিয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ন’টি কাজের ক্ষেত্রে এটা লক্ষ্য করা গিয়েছে টেন্ডার নির্ধারিত অর্থমূল্যের ৩৩ থেকে ৪০ শতাংশ কমে ওয়ার্কঅর্ডার দেওয়া হয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, একাধিক কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া মানা হয়নি। কাজের গুণগত মানের অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে প্রশাসন দু’টি কাজ নিয়ে তদন্ত করে। একটি হল বাবনাবেড়া মৌজার সাধন ঘোষের বাড়ি থেকে নেপাল ঘোষের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। অন্যটি হল রাজবাঁধের বিষ্টু রায়ের বাড়ি থেকে ডাঙাপাড়া পর্যন্ত রাস্তা ও একপাশের ড্রেন নির্মাণ। তদন্তকারীদের নজরে আসে প্রথম ক্ষেত্রে রাস্তার দৈর্ঘ্য কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নতুন ড্রেন নির্মাণ না করে একটি ড্রেনের সংস্কার করা হয়েছে। এই দু’টি অভিযোগের সত্যতা পেয়েই বিষয়গুলি নিয়ে শোকজ করা হয়েছে নির্মাণ সহায়ককে। একইভাবে টেন্ডার না করা নিয়ে শোকজের মুখে পড়েছেন প্রধান। অভিযুক্ত প্রধান চয়নিকা পাল বলেন, বৃহস্পতিবারই শোকজের চিঠি পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এর লিখিত জবাব দেব।
অভিযুক্ত নির্মাণ সহায়ক সাধন মল্লিক বলেন, স্থানীয়দের দাবি মেনেই কাজের কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল। আমি দ্রুত এর উত্তর দেব।
অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল। তিনি এই অন্যায়ের বিহিত করবেনই। আর তাঁর দেওয়া সাহসেই তো আমরা প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানোর পর প্রশাসন এত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা সকলে খুব খুশি।