গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শান্তিপুর পুরসভার ১২, ১৩, ১৮, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের নাম না করে কাটমানি নেওয়ার পোস্টার লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডটি শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দের। পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘কাউন্সিলার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে বাড়ি প্রতি ৪০০০০/৫০০০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার প্রতিবাদে কাউন্সিলারের বাড়ি ঘেরাও অভিযানে দলে দলে যোগদান করুন।’ নীচে লেখা সৌজন্যে ওয়ার্ড নাগরিকবৃন্দ। প্রতিটি ওয়ার্ডে নম্বর উল্লেখ করে আলাদা আলাদাভাবে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। শান্তিপুর পুরসভার প্রায় ১০ টি ওয়ার্ডে কাটমানির পোস্টার দেখতে পায় সাধারণ মানুষ। পোস্টারে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকারি আবাস যোজনা থেকে কাটমানি খেয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলাররা। এদের বাড়ি ঘেরাও অভিযানে দলে দলে যোগদান করুন। ঘটনায় বিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
শান্তিপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কুমারেশ চক্রবর্তী বলেন, কে বা কারা রাতের অন্ধকারে এই কাজ করেছে জানি না। তবে দলগতভাবে এর তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে, বিজেপির শান্তিপুর যুব মোর্চার সভাপতি দীনেশ রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যখন দেখছেন দল ভেঙে যাচ্ছে তখন কাটমানি নিয়ে নাটক শুরু করেছেন। আমাদের শহরে যে পোস্টারগুলো পড়েছে সেগুলি ওদেরই গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দে বলেন, শহরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বোঝা যাচ্ছে রাত আড়াইটের পর মতিগঞ্জের দিক থেকে একটি সাদা গাড়ি বের হয়। সেই গাড়িটি থেকে জনা চারেক ব্যক্তি গুলবাজের মোড়ে নামে। তাদের মধ্যে একজনকে চেনা গেছে। তাছাড়া পোস্টারে কারও নাম নেই। এই ঘটনায় আমাদের সম্মানহানি হয়েছে। পুলিসকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করব।
বুধবার নবদ্বীপ ব্লকের চরমাজদিয়া-চরব্রহ্মনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে কাটমানি ফেরত দেওয়া, সরকারি প্রকল্পের দুর্নীতি, স্বজন পোষণ সহ বিভিন্ন দাবিতে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে বিজেপি। প্রধানের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
বুধবার বিজেপির ডাকা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয় বেলা ১১টায়। শেষ হয় দুপুর দু’টো নাগাদ। বিজেপির অভিযোগ, নবদ্বীপ ব্লকের চরমাজদিয়া- চরব্রহ্মনগর পঞ্চায়েতের সাধারণ বাসিন্দাদের কাছ থেকে শৌচাগার সহ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে কাটমানির টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা কাটমানি নেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষকে সরকারি প্রকল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এবিষয়ে নবদ্বীপ ব্লকের ২৫ নম্বর জেলা পরিষদের বিজেপি নেতা চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বলেন, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি, স্বজন পোষণ, কাটমানির টাকা ফেরত প্রভৃতি দাবিতে আমরা পঞ্চায়েত অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করি। প্রধান আমাদের অভিযোগ মন দিয়ে শুনেছেন এবং অভিযোগের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে, চরমাজদিয়া-চরব্রহ্মনগর পঞ্চায়েতের প্রধান রীনা দাস বলেন, বিজেপির তরফে আট দফা দাবিতে একটি স্বারকলিপি দেওয়া হয়। ওদের সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। আমাদের পঞ্চায়েতে কোনও প্রকার কাটমানি বা অন্য দুর্নীতি হয়নি। ওরা তার কোনও প্রমাণও দেখাতে পারেনি। মিথ্যা অপপ্রচার করে কোনও লাভ হয় না।
অন্যদিকে, কালীগঞ্জের গোবরা পঞ্চায়েতে এলাকায় কাটমানি নিয়ে পোস্টার পড়ে। বল্লভপাড়া হাটখোলা মোড়ে বাজার এলাকায় তিন চার জায়গায় হাতে লেখা কিছু পোস্টার দেখতে পান এলাকার বাসিন্দারা। এদিন সকালে হাটখোলা মোড়ে মানুষ বাজারে আসতেই প্রথম পোস্টারগুলি দেখা যায়। তবে পোস্টারে কারও নাম উল্লেখ করা নেই। হাতে লেখা পোস্টারে লেখা আছে, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অবিলম্বে কাটমানি ফেরত দিতে হবে। এরপর নম্বর বসিয়ে এক একটি প্রকল্পের নাম লিখে দেওয়া হয়েছে। সরকারি আবাস যোজনা, নির্মল বাংলা, ১০০ দিনের কাজ এবং বিধবা ভাতা। এই সমস্ত সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নেওয়া হয়েছে বলেই এই পোস্টার পড়েছে। পোস্টারের নীচে লেখা আছে কাটমানি গৃহীতাগণ ক্রমশ প্রকাশ্য। গোবরা পঞ্চায়েত বর্তমানে কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএমের দখলে রয়েছে। এখানে বিরোধী তৃণমূল। কে বা কারা পোস্টার দিয়েছে তা নিয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছে এলাকার বাসিন্দারা।