পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্থানীয় ও ধনুডি হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় সাতদিন ধরে সব মিলিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ৯জন ছাত্রী স্কুলে আসার পর অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। বুধবারও এক ছাত্রী স্কুলে আসার পর ক্লাসে মাথা ঝাঁকিয়ে, অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তার বাড়িতে খবর দেয়। পরে ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু স্কুলে নয়, অস্বাভাবিক আচরণ করা ছাত্রীদের ঘিরে গ্রামে রীতিমতো পুজো শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে ধনুডি এলাকারই বাসিন্দা তথা অভিভাবক সুনীল মাহাত বলেন, প্রায় সাতদিন আগে সমস্যাটা শুরু হয়েছে। আমার মেয়ে ওই স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ে। মেয়ের কাছে জেনেছি, স্কুলে সমস্যা শুরু হওয়ার প্রথমদিনই তিনজন অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। পরে সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়তে থাকে। মেয়ে আর ভয়ে স্কুলে যেতে চাইছে না। তাই এদিন আমি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। সেই সময়ই এক ছাত্রী অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। সবাই বলছে ওই মেয়েদের উপর নাকি ‘মা’ ভর করেছে।
এবিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোভনলাল মণ্ডল বলেন, ক্লাস চলাকালীনই আচমকা ছাত্রীরা মাথা ঝাঁকিয়ে, বিভিন্ন বিষয়ে উল্টোপাল্টা বলে থরথর করে কাঁপতে শুরু করছে। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীদের মধ্যেই এটা বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে গোটা স্কুলেই ছাত্রীদের মধ্যে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। স্কুলে আতঙ্কের পরিবেশ কাটাতে এবং ছাত্রীদের এই সমস্যা থেকে বের করে আনার জন্য বিজ্ঞান মঞ্চের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবারই তাঁদের স্কুলে আসার কথা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুধুমাত্র স্কুলেই নয়, আতঙ্কের পরিবেশ ছড়িয়েছে স্থানীয় এলাকাতেও। যেসব ছাত্রী অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করেছে তাদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি স্কুল সংলগ্ন এলাকায়। ওই এলাকার বাসিন্দাদেরও অনেকেই জড়ো হয়ে একই রকম আচরণ করছে। প্রত্যেককেই নাকি ‘মা’ ভর করেছেন। গ্রামে ওই ছাত্রীদের দেখতে এবং পুজো করতে প্রায় প্রতিদিনই বহু মানুষ জড়ো হচ্ছেন। কেউ পুজো করছেন, কেউ আবার নিজের মনের ইচ্ছা পূরণের কথা বলছেন। অনেকেই আবার ওই ছাত্রীদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিচ্ছেন। বারংবার মাথা ঝাঁকিয়ে সারা শরীর কাঁপিয়ে ওই ছাত্রীরা আশীর্বাদও দিচ্ছে।
এবিষয়ে পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক তথা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রধান শিক্ষকের কাছে শুনে মনে হয়েছে, ওই স্কুলে ‘গণ-হিস্টিরিয়া’ তৈরি হয়েছে। কিছু বদ লোক এর ফায়দাও তুলছে বলে খবর পেয়েছি। বৃহস্পতিবার আমরা স্কুলে গিয়ে ছাত্রীদের সচেতন করার পাশাপাশি কোন ঘটনা থেকে এই গণ-হিস্টিরিয়ার উৎপত্তি হয়েছে তা খোঁজার চেষ্টা করব।