বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
পঞ্চায়েত প্রধানের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সাতমাসা মাঝ পাড়ার বাড়িতে সোহরাব সাহেব দোতলার একটি রুমে তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। রাত আড়াইটা নাগাদ হঠাৎই আওয়াজ শুনতে পান তাঁর স্ত্রী নীলিমা বেগম। এরপর তিনি বাইরের বারান্দায় আসতেই দেখেন, জানালার কাচ ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নীলিমা বেগম বলেন, রাত তখন আড়াইটা থেকে ৩টে হবে। আমি শৌচালয়ে যাব বলে রুম থেকে বের হই। সেই সময় হঠাৎই গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। তারপর স্বামীকে ডাকি। পরে আলো জ্বেলে দোতলার বারান্দায় আসতেই দেখি, বারান্দার জানালার কাচ ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গুলির বিকট শব্দে আমার কান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর চিকিৎসার জন্য আমাকে নারায়ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোহরাব সাহেব বলেন, সোমবার রাতেও মোটর বাইকে চেপে একদল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী আমার বাড়ির দরজায় লাথি মারে। এরপর আমরা ঘরের বাইরে বের হতেই তারা পালিয়ে যায়। আগেও আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এক মাস আগে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিরাপত্তা চেয়েছিলাম। সেই হিসেবে বর্তমানে আমার দেহরক্ষী রয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গুলি চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সিপিএমের কিছু হার্মাদ বর্তমানে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তারাই এই ঘটনা ঘটাচ্ছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি। তাই রাতে যদি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটত তাহলে আমরা অবশ্যই শব্দ শুনতে পেতাম। কিন্তু, এমন কোনও আওয়াজ আমরা শুনতে পাইনি।
এদিকে, গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে বুধবার দুপুরে আরামবাগ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, বর্তমানে আমি রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছি। ঘটনার দিন রাতে বাড়ির তিনতলার একটি রুমে দেহরক্ষী ঘুমিয়ে ছিলেন। গুলি চালানোর পর আমি তাঁকে ডেকে বিষয়টি দেখাই। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপি এলাকাজুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে এবং আমাকে প্রাণে মারার টার্গেট করেছে।
যদিও এই ঘটনা সম্পূর্ণরূপে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল বলে জানিয়েছেন আরামবাগ জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি বিমান ঘোষ। তিনি বলেন, ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও কর্মী-সমর্থক যুক্ত নেই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কুমার দাস বলেন, তদন্তে গুলি চালানোর প্রমাণ মেলেনি। রাতে ওই বাড়ির কাচের জানালায় কেউ বা কারা পাথর ছুঁড়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রীর কান থেকে রক্তক্ষরণের বিষয়টি জানার জন্য চিকিৎসকদের মতামত নেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।