বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের বুথ সভাপতি জিতেন দাসের বাড়িতে ওইদিন রাত ১১টা নাগাদ বোমা ছোড়া হয়। অভিযোগ উঠেছে লাভপুর এলাকার বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে বোমাবাজি হয়েছে। বিজেপিকে ফাঁসাতে তাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। বোমার আঘাতে জখম হন জিতেন দাস ও তার স্ত্রী পরিণীতা দাস। তাদের প্রথমে লাভপুর প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বোমা বিস্ফোরণের ফলে বাড়ির অ্যাসবেসটসের ছাদ ভেঙে যায়। রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে যায় লাভপুর থানার পুলিস। তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিন সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পরিবেশ থমথমে। গ্রামের মধ্যে এভাবে বোমা ছোঁড়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন সকলেই। গ্রামবাসীদের দাবি দোষীরা যে রাজনৈতিক দলের সদস্য হোক না কেন তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে লাভপুর অঞ্চলে ভালো ফল করেছে বিজেপি। তারপর থেকেই এলাকায় সক্রিয় হয়ে সংগঠন বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। তৃণমূলের লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগদানের পর তাদের শক্তি আরও বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিপ্রটিকুরি পঞ্চায়েতে ভাঙচুর করা হয়। সেখানেও অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, বিজেপির দুষ্কৃতীরা তোলা চাইতে এসে না পেয়ে ভাঙচুর করে পঞ্চায়েতে। অন্যদিকে, বিজেপি জানিয়েছিল গ্রামের মানুষদের ১০০দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে না। তা জানতেই গ্রামবাসীরা গিয়েছিল। তৃণমূলই ভাঙচুর করে বিজেপির নামে দোষ দিচ্ছে।
বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের সঙ্গে সাধারণ মানুষ আর নেই। তাই পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিকে দমন করতে প্রতিদিন মিথ্যা কেস দেওয়া হচ্ছে। এভাবে বিজেপিকে আটকানো যাবে না।
তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বলেন, সংগঠন না থাকার ফলে বোমা বন্দুকের জোরে এলাকা দখল করতে চাইছে বিজেপি। প্রতিদিন লাভপুর অঞ্চল অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। মানুষ সব দেখতে পাচ্ছে। তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
অন্যদিকে, আবারও তৃণমূল নেতা কাটমানির টাকা ফেরত দিলেন বীরভূমে। শনিবার রাতে নানুর থানার কীর্ণাহার ২নম্বর পঞ্চায়েতের ফেউগ্রামে শাসকদলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য টাকা ফেরত দেন। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে গ্রামবাসীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ও টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। ২০১৮সালের পঞ্চায়েত ভোটের আগে পর্যন্ত তিনি এলাকার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির জন্য গ্রামের ১০০জনের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। শনিবার রাতে তিনি ৩৫জন গ্রামবাসীকে ২০০০টাকা করে মোট ৭০হাজার টাকা ফেরত দেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি বাকি টাকাও ফেরত দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর কাটমানি ইস্যুতে সব থেকে বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বীরভূম। শাসকদলের প্রাক্তন ও বর্তমান নেতাদের ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তৃণমূল অভিযোগ করে বিজেপি এলাকাবাসীদের উস্কে দিয়ে এই আন্দোলন করাচ্ছে। তারা কোনওরকম অনিয়মের সঙ্গেই যুক্ত নয়। কিন্তু তারই মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় শাসকদলের নেতারা টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করেছেন। অপরদিকে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান নানুরের বঙ্গছত্র গ্রামে দলীয় বৈঠকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, কাটমানি আন্দোলনের পিছনে রয়েছে ঘাসফুল শিবিরেরই একাংশের মদত। এসব ঘটনার পর আলাদা করে অক্সিজেন পেয়েছে জেলা বিজেপি।