পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সিউড়ি-২ ব্লকের পর লাভপুর ব্লকের ঠিবা পঞ্চায়েতের বাঘা গ্রামে কাটমানির টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনা ঘটল। সাতদিন আগে পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান রূপা বাগদির স্বামী সুমন্ত বাগদির বাড়ি ঘিরে কাটমানি ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। অভিযোগ ছিল, তিনি আবাস যোজনার বাড়ি থেকে কারও কাছে পাঁচহাজার কারও কাছে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পেও দুর্নীতি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ওঠে গ্রামের বাসিন্দা গোষ্ঠ বাগদির বাড়ির সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি। ওইদিনই গ্রামবাসীদের চাপের মুখে তিনি টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়ে মুচলেকা দেন। তিনি জানান, গোষ্ঠ বাগদিকে বাড়ি তৈরির ১ লক্ষ ২০হাজার টাকাই ফেরত দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার গোষ্ঠবাবুকে ১ লক্ষ ২০হাজার টাকা ফিরিয়ে দেন সুমন্ত বাগদি।
প্রাক্তন প্রধানের স্বামী সুমন্তবাবু বলেন, গ্রামের দুই ব্যক্তির একই নাম হওয়ায় বাড়ি বিলির সময় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। দলীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানোও হয়েছিল। তবুও আমাকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়েই পৈত্রিক জমি বন্ধক রেখে টাকা ফিরিয়ে দিলাম। কোনওরকম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই আমি।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে লাভপুর ব্লকের কান্দরকুলো গ্রামের প্রাক্তন বুথ সভাপতি রামকৃষ্ণ মণ্ডল, প্রাক্তন সুপারভাইজার বেণীমাধব মণ্ডল ও প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী অষ্টম মণ্ডলের বাড়ি ঘিরে টাকা ফেরতের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পদে থাকাকালীন ওই তিন ব্যক্তি পঞ্চায়েতের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গ্রামের মানুষের অনেকের ১০০দিনের জবকার্ড হাতে রেখে টাকা তুলে আত্মসাত করেছেন। সেই সমস্ত টাকা ফেরতের দাবি নিয়ে তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করা হয়। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। তাঁদের দাবি, যদি কোনওরকম অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে টাকা ফেরত দিতে প্রস্তুত। কিন্তু এভাবে বাড়িতে এসে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখালে হবে না। সংশ্লিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পঞ্চায়েতে বা লাভপুর বিডিও অফিসে জানান গ্রামবাসীরা।
কান্দরকুলো গ্রামের প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী অষ্টম মণ্ডল বলেন, কোনওরকম দুর্নীতির সঙ্গেই আমরা কেউ জড়িত নয়। তৃণমূলের দলের লোকজনই আমাদের হেনস্থা করার জন্য গ্রামবাসীদের উস্কে দিয়ে বিক্ষোভ করাচ্ছে। ঠিবা অঞ্চলের তৃণমূল যুব সভাপতি সাহিন কাজি বলেন, বছর দুয়েক আগেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ওঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এদিন গ্রামবাসীরা তাঁদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। দলের কর্মী থাকুন বা না থাকুন, টাকা খেয়ে থাকলে তা অবশ্যই ফেরত দিতে হবে।
একইভাবে এদিনও উত্তপ্ত হয় সিউড়ি-২ ব্লক। ওই ব্লকের ইকড়া গ্রামের পোস্ট অফিস ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামবাসীদের একাংশ। মূলত বিজেপির মদতে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে অভিযোগ করে ১০০দিনের সুপারভাইজার জবকার্ড রেখে দিয়েছিলেন এবং পাসবইও নিয়ে নিয়েছিলেন। এখন পাসবুক ফেরত চাইতে গেলে জানানো হয়েছে, ৫০টি বই হারিয়ে গিয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, ১০০দিনের কাজের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে দিয়ে তা সুপারভাইজার টাকা তোলার ফর্মে সই করিয়ে তুলে নিয়েছেন। পোস্ট অফিসের এক আধিকারিক লিফ্টন গরাই বলেন, টাকা তোলার ফর্মে সই থাকায় এক ব্যক্তিকেই একাধিক অ্যাকাউন্টের টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরেই অভিযুক্তদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। কাটমানির টাকা ফেরত না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।