কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক মানস মণ্ডল বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর দিনের বেলায় বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়। কিন্তু, কাউকে পাওয়া যায়নি। সেই জন্য এদিন ভোর বেলা অভিযান চালানো হয়। স্থানীয় অযোধ্যা, বৈকুণ্ঠপুর, এমআইটি ও বাইপাস এলাকায় মোট ১৯টি গাড়ি ধরা হয়েছে। ওভারলোডিং সহ অন্যান্য অভিযোগে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিষ্ণুপুরের মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ফাল্গুনি শতপথী বলেন, মহকুমা এলাকায় বালি মজুতের জন্য প্রায় ২০টি বৈধ স্টকইয়ার্ড রয়েছে। সেখান থেকে বালি পরিবহণে ওভারলোডিংয়ের অভিযোগে ১৪টি ট্রাক আটক করা হয়েছে। পরিবহণ দপ্তর থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও ৩টি ট্রাক নদ থেকে সদ্য তোলা বালিবোঝাই করে নিয়ে আসছিল। সেই ট্রাকগুলিও আটক করা হয়। একটি ট্রাক খারাপ হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। সেটা ছাড়াও অপর একটি ট্রাক্টর আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ জুন থেকে থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৈধ সমস্ত বালি খাদান বন্ধের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় দ্বারকেশ্বর, দামোদর প্রভৃতি নদে প্রায় ৭০টি বৈধ খাদান রয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুযায়ী ওই খাদানগুলি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বালির চাহিদা থাকায় আগে থেকে বালি মজুত রাখার জন্য প্রশাসন বেশকিছু স্টক ইয়ার্ডের অনুমতি দিয়েছে। বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় এরকম প্রায় ২০টি স্টক ইয়ার্ড রয়েছে। তাই খাদান বন্ধ থাকলেও সেখান থেকে সঠিক চালান অনুযায়ী বালি পরিবহণে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এর বাইরেও বিষ্ণুপুরের এমআইটি, অযোধ্যা, জয়কৃষ্ণপুর, প্রকাশঘাট প্রভৃতি এলাকায় রাতের অন্ধকারে নদ থেকে বালি তুলে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতে সরকারের রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, স্টক ইয়ার্ড থেকেও নির্দিষ্ট পরিমাপের চেয়ে বেশি বালি পরিবহণ করা হচ্ছে। তাতে এলাকার রাস্তা ঘাট ভাঙছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা বেশকিছু দিন ধরে এবিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান। কিন্তু, অভিযোগ পাওয়ার পর বিভিন্ন ঘাটে অভিযান চালালেও দিনের বেলা তাঁদের নজরে পড়েনি। সেই মতো বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ মহকুমা শাসক, মহকুমা ভূমি সংস্কার আধিকারিক পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন খাদান এলাকায় অভিযান চালান। অযোধ্যা, বৈকুণ্ঠপুর, এমআইটি ও বাইপাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওভারলোডিং ও বেআইনি বালি পাচারের অভিযোগ মোট ১৯টি গাড়ি আটক করা হয়। অধিকাংশ গাড়ি করে বসিরহাট ও বারাসত এলাকায় বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
অযোধ্যা এলাকার বাসিন্দারা বলেন, প্রতি বছর প্রশাসনের নির্দেশে বালি খাদান বন্ধের সময় বেশ কিছু লোকজন অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। বহিরাগতদের মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে তারা বালি পাচার করে। এলাকায় বর্তমানে বালি তোলায় নির্দেশিকা জারির বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দারা অবগত আছেন। তাই দিনের বেলা বালি না তুললেও গভীর রাতে খাদান থেকে জেসিবি দিয়ে বালি তুলে রাতেই পাচার করা হচ্ছে। বিষয়টি পুলিস ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এদিন অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু গাড়ি প্রশাসনের লোকজন ধরেছেন। তবে এই ধরনের অভিযান ধারাবাহিকভাবে চালালে তবেই পাচার বন্ধ হবে।