বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
গত জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জন্য ঐক্যশ্রী প্রকল্প চালু করেছেন। এই প্রকল্পে প্রি মেট্রিক(প্রথম থেকে দশম শ্রেণী) ছাত্র ছাত্রীরা বছরে ১১০০ থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত পাবে। পোস্ট মেট্রিকে(মাধ্যমিক উত্তীর্ণ) ১০ হাজার ২০০ থেকে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত পাবে। দুই ধরনের স্কলারশিপ পেতে হলে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক আয় দু’লক্ষ টাকার মধ্যে হতে হবে। মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ স্নাতক, স্নাতকোত্তর, আইআইটি, আইটি, এনআইটি, এএফটি ইত্যাদি কোর্সে পাঠরত পড়ুয়ারা পাবেন। তাঁদের ২২ হাজার থেকে ৩৩ হাজার টাকা স্কলারশিপ দেওয়া হবে। এই স্কলারশিপের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক আয় আড়াই লক্ষ টাকার মধ্যে হতে হবে।
সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, আগে সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের স্কলারশিপ দিত কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালে আবেদন করতে হতো। যে শিক্ষাবর্ষে আবেদন করত, স্কলারশিপের টাকা আসত পরের শিক্ষাবর্ষে। তাও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পডুয়া পেতেন। বাকিরা পেতেন না। স্কলারশিপের সেই টাকা রাজ্য সরকারকেই দিতে হতো। গত মাসে রাজ্য সরকার ঐক্যশ্রী প্রকল্প চালু করেছে। এই স্কলারশিপের পুরো টাকা রাজ্য সরকার বহন করবে। রাজ্য সরকারের পোর্টালেই অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। পড়ুয়ারা অক্টোবরে স্কলারশিপের টাকা অ্যাকাউন্টে পাবেন। স্কলারশিপের জন্য এক বছর অপেক্ষা করতে হবে না।
নদীয়া জেলায় এবছর সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের স্কলারশিপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্র আড়াই লক্ষ। জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, স্কলারশিপ নিয়ে আগে খুব একটা সচেতনতা ছিল না সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের মধ্যে। অনেক অভিভাবক জানতেন না স্কলারশিপ আছে। ফলে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতেন না। জেলা সংখ্যালঘু দপ্তর থেকে প্রতিটি স্কুলে গিয়ে অভিযান চালানো হয়। এমনকী ক্যাম্প করে অনলাইনে আবেদন করিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। এতে সাফল্য এসেছে। গত দু’বছর ধরে ১০০ শতাংশ পড়ুয়া স্কলারশিপের জন্য আবেদন করছে। জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিক আজমল হোসেন বলেন, সচেতনতা বেড়েছে। আমরা প্রতিটি স্কুল, মাদ্রাসায় গিয়ে ক্যাম্প করি। ক্যাম্পের মাধ্যমে সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেন। ঐক্যশ্রী প্রকল্প সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। সংখ্যালঘুদের মধ্যে শিক্ষার হার বাড়াবে।
এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার বিডিও, এসডিও, জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের সদস্য নাসিরুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আগে কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের স্কলারশিপে বঞ্চিত করত। ইচ্ছাকৃতভাবে পড়ুয়াদের আবেদনপত্র হারিয়ে দিত। অনলাইনে আবেদন করলেও সবাই স্কলারশিপের টাকা পেত না। এবার ঐক্যশ্রী আসাতে তা হবে না। সকলেই স্কলারশিপের টাকা পাবে। এই প্রকল্পে সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা ভীষণভাবে উপকৃত হবে। এই প্রকল্পের প্রচার আরও চাই।
রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান আবু আয়েশ মণ্ডল বলেন, ঐক্যশ্রী প্রকল্পে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন গ্রহণ শেষ হবে। অক্টোবর মাসেই স্কলারশিপের টাকা পাবেন পড়ুয়ারা। স্কলারশিপের জন্য আর এক বছর অপেক্ষা করতে হবে না। তবে এই প্রকল্পের আরও প্রচার দরকার। পড়ুয়াদের অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতাও বাড়াতে হবে।